বেহাল দশায় স্বাস্থ্যসেবা

অতি ঝুঁকিপূর্ণ, জরুরি ভিত্তিতে মেরামত ও সংস্কারের অভাবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পরিচালনাধীন নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর সেবায় চলছে বেহাল অবস্থা। করপোরেশনের অধীন বর্তমানে ৫১টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও আরবান হেলথ কেন্দ্র আছে ৭৮টি। এর মধ্যে ১৬টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র অতি ঝুঁকিপূর্ণ, ১৬টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জরুরি ভিত্তিতে মেরামত দরকার এবং ১৮টি স্বাস্থ্য কেন্দ্র সংস্কার করতে হবে। সেবা প্রদানকারী কেন্দ্রগুলোর ওপর খোদ করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের তৈরি এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো থেকে সেবা নিয়ে নগরবাসীদের মাঝে রয়েছে চরম অসন্তুষ্টি।
Read More News

চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, করপোরেশনের অধীন বিদ্যমান সেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ১৬টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ। অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের মধ্যে আছে দক্ষিণ পাহাড়তলী চসিক দাতব্য চিকিৎসালয়, পাঁচলাইশ আবদুর রহিম চসিক দাতব্য চিকিৎসালয়, চসিক নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র (৯ নম্বর ওয়ার্ড), এয়াকুব আলী চসিক নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, আবুলিয়া চসিক নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, এম এ সালাম চসিক নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনুছ মিয়া চসিক দাতব্য চিকিৎসালয়, আবদুল কাদের আল মাদানী চসিক দাতব্য চিকিৎসালয়, নুরুল গণি মিয়া চসিক নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৪০ নম্বর ওয়ার্ড চসিক নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ফিরিঙ্গিবাজার মিডওয়াইফারি ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি। এ ছাড়া এখন ব্যবহার অনুপযোগী হাজী ওয়াইছ খাতুন চসিক মাতৃসদন হাসপাতাল ও দাতব্য চিকিৎসালয় এবং নুরুল ইসলাম চসিক মাতৃসদন হাসপাতাল। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করতে হবে আটটি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাতৃসদন হাসপাতাল ও দাতব্য চিকিৎসালয়। সেই সঙ্গে চুনকাম, বাথরুমে পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্কার কাজ করতে হবে ১৮টি সেবা কেন্দ্রের।

এ বিষয়ে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমাম হোসাইন রানা বলেন, নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং আরবান সেন্টারের মধ্যে অনেকগুলোই এখন ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকগুলোর জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার কাজও করতে হবে। এসব নিয়ে আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি। প্রতিবেদনটি মেয়র বরাবরে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগে এরই মধ্যে সংস্কার এবং উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে।

জানা যায়, বর্তমানে চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে চারটি মাতৃসদন হাসপাতাল। এর মধ্যে দুটিতে বহিঃবিভাগে রোগী দেখা হয়। এ ছাড়া রয়েছে একটি জেনারেল হাসপাতাল, ৫১টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও দাতব্য চিকিৎসালয়, একটি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ১১টি হোমিওপ্যাথিক দাতব্য চিকিৎসালয়, সাতটি ইপিআই জোন (টিকাদান কেন্দ্র), একটি মিডওয়াইফারি ইনস্টিটিউট, একটি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যাটস ও একটি আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার। নানান ধরনের সীমাবদ্ধতা, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানগুলোয় টিকাদান ছাড়া অন্যান্য সেবা কার্যক্রম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। অথচ নিকট অতীতেও চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যাপক সুনাম ছিল। নগরবাসী স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো থেকে প্রয়োজনীয় সেবা নিত। কিন্তু এখন আর সেই সুনাম নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *