বাংলাদেশের অর্থনীতির চিত্র আশাব্যঞ্জক নয়

বাংলাদেশের অর্থনীতির চিত্র খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। দীর্ঘদিনেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না মূল্যস্ফীতি, যা আইএমএফের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ে সংস্থাটি শঙ্কিত।

বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আইএমএফের গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে সংস্কার উদ্যোগ চালিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির বিকল্প নেই। আর্থিক খাতের হালহকিকত জানতে গত ১৬ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন আর্থিক দপ্তরে মতবিনিময় করে আইএমএফ মিশন। ব্যাংক খাত, রাজস্ব আয়সহ অর্থনীতির নানা খাতের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত জানে। এনিয়ে সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন সচিবালয়ে। ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, আইএমএফ কর্মসূচিতে থাকা একমাত্র বাংলাদেশই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পিছিয়ে আছে। যদিও এর নেপথ্যে বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অনেক কারণ আছে। তবে আমরা আরেকটু ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করেছিলাম।
Read More News

কয়েকদিন আগে দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য ২২ হাজার কোটি ছাপিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এই উদ্যোগকে টেকশই পন্থা মনে করে না আইএমএফ।

ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, টাকা ছাপিয়ে সংকট সামাল দেওয়ার পথ সঠিক নয়। এতে মূল্যস্ফীতি উসকে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক যে কৌশল নিয়েছে তা সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। কোনো কারণে পরিকল্পনা সফল না হলে ঝুঁকি বাড়বে। চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি নেমে হবে ৩.৮ শতাংশ। ২০২৫-এ মূল্যস্ফীতি হবে ১১ শতাংশ। প্রশ্ন ছিল, পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে কী চোখে দেখছে আইএমএফ। তিনি বলেন, আইএমএফের কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। সংস্থাটি অর্থনীতি নিয়ে কাজ করে। তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির বোর্ড মিটিংয়ে অনুমোদন মিলবে। সবমিলিয়ে চলতি অর্থবছরে ঋণ দাতা এই সংস্থার কাছ থেকে মিলতে পারে মোট ১৩০ কোটি ডলার। তবে, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, অর্থনীতি আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এদিকে, রিজার্ভ নিয়ে আইএমএফের শর্ত পূরণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিট রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে আইএমএফ। এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ ছাড় করেছে সংস্থাটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *