বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে রাতে চলাচলরত ফেরিতেও ঢাকামুখী যাত্রীদের বাঁধভাঙ্গা স্রোত দেখা গেছে। জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক, পচনশীল পণ্যের ট্রাক, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, লাশের গাড়ি ও প্রাইভেট গাড়ির পাশাপাশি যাত্রীদের চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো।
যাত্রীরা কৌশলে রাতের ফেরিকেই বেছে নিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধির মানার কোনো বালাই নেই। ভয়াবহ পরিস্থিতিকে নিমন্ত্রণ করে ডেকে নিয়ে আসছে অসচেতন মানুষ। দেশে চলমান করোনা মহামারীর মধ্যে আবার নতুন আতঙ্ক ভারতীয় ধরণ ধরা পড়েছে বাংলাদেশে। বিষয়টি নিয়ে সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিশেষজ্ঞদের ভাবিয়ে তুলেছে। অথচ সাধারণের মধ্যে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।
রোববার রাত ৮টা থেকে ৩টি ফেরি ছেড়ে যায় শিমুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে। দিনভর ঘাটে অপেক্ষারত যাত্রীরা এবং বিকালে ঘাটে আসা যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন। শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে আসা ফেরি বাংলাবাজার ঘাটে এসে আনলোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে ফেরিতে উঠে পড়েন। এ সময় জরুরি সেবার গাড়ি, রোগীর গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ফেরিতে তুলতে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।
Read More News
গণপরিবহন, লঞ্চ ও স্পিডবোট বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবার থেকে মানুষের ঢল নামে শিমুলিয়া ও বাংলাবাজার ফেরিঘাটে। স্পিডবোট ও লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় যাত্রীরা যানবাহন পারাপারে নিয়োজিত ফেরিকেই বেছে নেয়। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের চাপে চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। যাত্রীর ভারে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ফেরিগুলো জরুরি সেবা, লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স বহন করতে পারছিলো না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল দিনের বেলায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় বিআইডব্লিউটিসি।
হঠাৎ করে ফেরি বন্ধ করে দেয়ায় শনিবার সকাল থেকে উভয় ঘাটে অসংখ্য যাত্রীর পাশাপাশি জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনসহ মুমূর্ষু রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটকে পড়ে। যাত্রীচাপ দেখে শিমুলিয়া ঘাটে আটকে পড়া বিপুল সংখ্যক যাত্রী ২টি বড় ফেরিতে পার করে বাংলাবাজার ঘাটে পৌঁছে দেয়া হয়।
বাংলাবাজার ঘাটের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রোববার দিনে যে সব ফেরি চলাচল করেছে, তা জরুরি সেবায় নিয়োজিত ছিল। চলাচলরত ফেরিতে ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স, বেশকিছু মোটরসাইকেল পার করা হয়েছে। যাত্রীদের চাপ ছিল প্রচুর। রাতের ফেরিতেও ঢাকামুখী যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়।
বিআইডব্লিউটিসি বাংলাবাজার ফেরি ঘাটের ম্যানেজার সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাতে আমাদের সবগুলো ফেরি অর্থাৎ ১৬টির মধ্যে ১৫টি চলে। রোববার রাতে যাত্রী চাপ খুব বেশি ছিল। আজকেরটা তো আগাম বলতে পারছি না। মানুষ তো এখন করোনা ভয় পায় না। আমরা যেমন ভয় পাই; এরা ভয় পায় না। অনেকেই মাস্ক পড়ে না, পড়লেও থুতনির নিচে নামিয়ে রাখে।
তিনি জানান, ঘাটে যানজট রয়েছে। এখন সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ছোট গাড়ি একশ’র মতো এবং ট্রাক আছে ৪ শতাধিক। এগুলো পার করতে করতে আবার এসে জমা হবে।