“সুখ চিত্তে না, অর্থবৃত্তে”

গতকাল সারাদিন ধরে আমার সন্তানের বয়সী মুনিয়ার মৃত্যু, তার চেয়ে ৩০ বছরের বেশী বয়সের বাংলাদেশের ধনাঢ্য বরপুত্র সায়েম সোবহান আনভীর কাহিনী সারা বাংলার আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।।

বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের বখাটে, চরিত্রহীন ছেলেরা বেলাল্লাপনা চালিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিনে। কেউ ধরা পরে কেউ পরেনা। অর্থ যজ্ঞের অধিকারী আমাদের অনেকের পুত্র কন্যারা যা করে থাকেন এটা হলো তাদের স্মার্টনেস কে কতোটা নারীর সাথে সম্পর্ক গড়তে পারে, কে কতোটা রিসোর্টে কতো জনকে নিয়ে গিয়েছে তার ফিরিস্তি। সাথে তাদের চ্যালাচামুন্ডা, সমাজের কথিত উপরি তলার লোকেরা, যারা তাদের পাহারা দিতে, সেইফে রাখতে ব্যস্ত।

আমার মনে হয় বাংলাদেশের তারকাখচিত হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট গুলোতে একটি জরীপ চালালেই ধরা পরবে কারা তাদের মূল কাস্টমার, কোনদিন, কাকে নিয়ে কখন, কোথায়, কতদিন কে থেকেছে বের করা কোন ব্যাপার না। আসলে তাদের কাছে মেয়েরা বসুন্ধরায় উৎপাদিত টিস্যু্র মতো, ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলা। তাদের কলিজা নাকি সারা দেহ জুড়ে। এতবড় কলিজার অধিকারী এটা করতেই পারে সবাক কিংবা অবাক হওয়ার কিছু নেই।।

Read More News

করোনায় পাশের দেশে চিতার দাবানল ছড়িয়ে পরেছে সারা এলাকা জুড়ে। আমাদের দেশের করোনায় টাকার কুমির হওয়া মানুষ গুলো টাকা উড়ানোর সু্যোগ না পেয়ে মত্ত হচ্ছে জঘন্য ঘৃন্য পাপাচারে। পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে কালো ধোয়া, আগুনের ফুলকি শত চেষ্টা করলেও কিন্তু গায়ে একটু আধটু লাগে। পরিত্রাণের উপায়? করোনা তুমি কোথায়?

একজন অভিভাবকের সন্তানটি শিক্ষা, কিংবা উচ্চশিক্ষার জন্য যখনই ঘরের বাহির হবে দেশ কিংবা বিদেশে, সন্তানের সার্বিক খবর রাখার দায়িত্ব বাবা মায়ের। তবে বাবা মা নিজেরাই যদি পথ ভ্রষ্ট হয় করার কি থাকে।।

ইদানিং সাধারন ঘরের নিম্নবিত্ত ঘরের ও বালিকাদের সাজ পোশাক, হেয়ারস্টাইল, জুতা, ব্যাগ দেখে অবাক হই। দশ হাজার বিশ হাজার, লাখ টাকা দামের শাড়ী, লেহেঙ্গা, স্টাইল এতো টাকা পায় কোথা থেকে?

মুনিয়া হত্যা কিংবা আত্নহত্যা শুধু অপরাধ মূলক কাজ নয়। এটি বাংলাদেশের সব পরিবারের মানুষের জন্য এক ভয়াবহ মেসেজ। আমাদের প্রফেশন ও দৃষ্টিকটু কজন ঢুকে পরেছে। তারা আমাদের চেয়ে শক্তিশালী। তাদের যারা উপভোগের সাথী বানায় তারা পক্ষ অবলম্বনে মরিয়া।।

আত্মীয় স্বজনের দাওয়াতে পাঁচ তারকা মানের রেষ্টুরেন্ট গুলোতে রাতে গেলে দেখা যায় এক অন্যজগত আমাদেরই অনেকের সন্তান সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওদের লজ্জা, শরম, হায়া সব চলে গেছে। যে মেয়েটি ভোগের পর মারা গেলো তার বাবা নাকি মুক্তিযোদ্ধা। একজন মুক্তিযোদ্ধা আদর্শিক মানুষ হন। মুক্তিযোদ্ধা মানেই মনের গহীনে অপূর্ব শ্রদ্ধা বোধ। মুক্তিযোদ্ধা পিতার সন্তান তার জন্মের পর থেকেই লালন পালন ধারন করবে আমি কার সন্তান। পরিবারের সকল সদস্য গনকি মেয়েটির খোঁজ রাখেনি না অর্থের মোহে মজেছিলেন সবাই। খোজঁ রাখেননি অবিবাহিতা, নাবালিকা এক লাখ টাকা ফ্লাট ভাড়া নিলো কার টাকায়? আর যিনি ফ্লাটের মালিক তিনি কি ভেবে নাবালিকাকে এতো বড় অংকের টাকায় বা ভাড়া দিলেন। প্রশ্ন কন্যার কত রাতের হিসাবে কতো টাকা উসুল হয়েছে? তার জীবনের বিনিময়ে।

মোগল হেরেম, সুলতান সুলেমানের সিনেমা ও আমাদের চোখ খুলেনি। কিভাবে নারীদের সেখানে অপব্যবহার করা হয়েছে।। আপনি, আপনার পরিবার বিষয়টি জেনেও নির্বৃত্ত করেন নি আপনার সুকন্যাকে কিংবা করেনি আপনার অন্য সন্তানেরা।
হায়রে অর্থ,পাতকি অর্থ তুই সব অনর্থের মূল।

আজ মেয়ে গেল, সন্মান, ইজ্জত সব গেলো এটা এমন নয় গায়ের ময়লা শ্যাম্পু সাবানে ধুয়ে নিলে শেষ। আজো সময় আছে যারা ইতিমধ্যে জড়িয়ে গেছো নোংরা জালে বেরিয়ে এসো। দাম্ভিক,অর্থ বিলাসী, নারী বিলাসী পুরুষ তোমাকে উপভোগ করে এভাবেই ডাষ্টবিনের ছুড়ে ফেলে দিবে বা মৃত্যুই হবে শেষ গন্তব্য। পথভ্রষ্ট না হয়ে সঠিক পথে ফিরে আসো। না হয়!! বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদবে। তারপরও মুক্তিযোদ্ধা বাবার কন্যা হত্যার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার পাক এই প্রত্যাশা।

জেসমিন সুলতানা
এডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *