রাজকন্যা লতিফা জীবিত আছেন কিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছ থেকে সেই প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার (ওএইসিএইচআর) বলেছে, দুবাইয়ের এই রাজকন্যা জীবিত আছেন কিনা, সেই প্রমাণ চাইলে আরব আমিরাত তা দিতে পারেনি।
দুবাই শাসকের এই নিখোঁজ কন্যাকে সবশেষ ২০১৮ সালে দেখা গিয়েছিল। গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, প্রিন্স লতিফা পরিবার ও চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে বাড়িতে আছেন। তিনি জীবিত আছেন কিনা দুবাইয়ের কাছে বেশ কয়েকবার সেই প্রমাণ চেয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রবসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশের সরকারের কাছ থেকেও একই দাবি এসেছে।
জেনেভায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র মার্তা হুরতাদো বলেন, আমাদের অনুরোধে সাড়া দেয়নি সংযুক্ত আরব আমিরাত। লফিতার বর্তমান অবস্থা নিয়েও তাদের কাছ থেকে কোনো পরিষ্কার ব্যাখ্যা আসেনি।
Read More News
তিনি বলেন, আমরা তার জীবিত থাকার কোনো প্রমাণ পাইনি। আমরা এমন একটি প্রমাণ চাই, যাতে তিনি বেঁচে আছেন বলে স্পষ্ট প্রমাণ থাকবে। আমাদের প্রথম উদ্বেগ হলো, রাজকন্যা লফিতা জীবিত আছেন তা নিশ্চিত হওয়া।
লতিফার বিষয়ে কথা বলতে আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছেন জাতিসংঘের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
এক ভিডিও বার্তায় শেখ লতিফা দাবি করেন, দুবাইয়ের রাজকুমারী লতিফা নিজেকে তার বাবা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাখতুমের ‘জিম্মি’ বলে দাবি করেছেন। মঙ্গলবার বিবিসি এমন একটি ভিডিও প্রচার করেছে। ফুটেজটি গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়েছে।
এতে ৩৫ বছর বয়সী রাজকন্যাকে বলতে দেখা গেছে, আমি একজন জিম্মি, আমি মুক্ত না। এই কারাগারের মধ্যে আমি বন্দি। আমার জীবন আমার হাতে না। তিনি একটি বদ্ধ বাথরুমের ভেতরে দেয়ালের সঙ্গে বসে কথা বলেন। বিবিসি বলছে, এই গোপন বার্তাটি রাজকুমারী তার বন্ধুদের কাছে পাঠিয়েছেন।
এর আগে ২০১৮ সালেও তিনি দেশ থেকে গোপনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ভারতের মালাবর উপকূল থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন। এরপর বাবার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব নিয়ে বছরজুড়ে পত্রিকার শিরোনাম হয়ে এসেছেন তিনি।
নতুন ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, আমি বাথরুম থেকে এই ভিডিও ধারণ করেছি। কারণ একটি দরজার সঙ্গে এটিই একমাত্র কক্ষ, যা বন্ধ করে রাখতে পারি। আমার কক্ষের দরজাটি বন্ধ করে রাখতে পারি না। কারণ তার চাবি নেই। ‘আমি একটি ভিলায় আছি। আমি একজন জিম্মি। ভিলাটি কারাগারে রূপান্তরিত করে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, জানলাগুলো বন্ধ করে রাখা। আমি তা খুলতে পারি না। বাইরে পাঁচ পুলিশ সদস্য এবং বাড়ির মধ্যে আরও দুই নারী পুলিশ আছে।
নির্মল বাতাসের জন্য বাইরে যাওয়ারও সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমি জানি না, কখন আমি মুক্তি পাব বা কখন আমার মুক্তি পাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। কাজেই আমার জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে রোজ আমি শঙ্কার ভেতরে থাকি।
তিনি মূলত ভারতের পশ্চিম উপকূলে পৌঁছাতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার আগেই ভারতীয় কোস্টগার্ড সদস্যরা তাকে আটক করে আরব আমিরাতের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়।