সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান আহমদ হত্যার নেপথ্যে থাকা এসআই (বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কাশেম শুনানি শেষে তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
Read More News
আদালত সূত্র জানায়, রিমান্ড শুনানিকালে আকবরের কিছু বলার আছে কিনা জানতে চান বিচারক। এ সময় আকবর নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমি কোনো দোষ করিনি।
এর আগে সোমবার সিলেট জেলা পুলিশ রাত ৮টার দিকে আকবরকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে। রাতেই পিবিআই তাদের কার্যালয়ে আকবরকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করে।
প্রসঙ্গত, রবিবার (৮ নভেম্বর) রাতে ভারতের দনা বস্তির খাসিয়ারা ভারতের অভ্যন্তরীণ এলাকা থেকে এসআই আকবরকে আটক করে। পরে সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী দনা এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছে খাসিয়ারা তাকে তুলে দেয়। দ্রুত এসআই আকবর আটকের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সিলেটের জেলা পুলিশ ও কানাইঘাট থানা পুলিশ সীমান্ত এলাকায় ছুটে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে আকবরকে উদ্ধার করে।
মুখে চাপ দাঁড়ি, গলায় মালা। এই হচ্ছে রায়হান হত্যার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেনের বেশভূষা। খাসিয়ারা তাকে পায়ে ও কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে। আটকের ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভারতীয় খাসিয়াদের প্রশ্নের জবাবে তিনি তার নাম আকবর বলে জানান।
‘মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য তোমরা মানুষ খুন করো’-এই বলে খাসিয়ারা যখন তাকে তিরস্কার করছিলেন-তখন উত্তরে আকবর বলেন, ‘আমি মারি নাই’। খাসিয়ারা এও জানান, রায়হানকে হত্যার ভিডিও তারা নেটে দেখেছেন।
কোন অপরাধে রায়হানকে মারা হলো জানতে চাইলে বরখাস্তকৃত এই এসআই বলেন, ‘আমি মারিনি ভাই, আমি ইচ্ছা করে একা মারিনি। পাবলিক মেরেছে তাই সে মরে গেছে। আমি বরং তাকে হাসপাতালে নিয়েছি। কিন্তু ওখানে সে মারা যায়। সে টাকা ছিনতাই করেছিলো। এসময় স্থানীয় অপর একজন বলেন, আর তার জান তোমরা ছিনতাই করেছ?’ উত্তরে আকবর বলেন, ভাই, আমরা জান নেইনি, বরং আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়েছি।
এদিকে আকবর গ্রেফতারের খবর পেয়ে দুপুরে কানাইঘাটে বিপুল সংখ্যক জনতার ভিড় জমে উঠে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তাকে নিয়ে কড়া নিরাপত্তার সঙ্গে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ।
আকবরকে সিলেট আনা হচ্ছে এমন সংবাদ প্রচার হলে সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার অফিসের সামনে জনতার ঢল নামে। সেখানে আকবরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে জনতা স্লোগান দিতে থাকে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আকবরকে নিয়ে পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে আসা মাত্রই একদল পুলিশ আকবরকে কর্ডন করে অফিসের ভেতর নেয়। এসময় ফটো সাংবাদিকদের কাছে ভিড়তে দেওয়া হয়নি। তখন আকবর তার গায়ের চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলেন।