কক্সবাজারের উখিয়া থানার ওসি সহ চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এ মামলাটি করেছেন একজন কলেজছাত্রী। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্জিনা আকতার, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল ইসলাম, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. শামীম ও কনস্টেবল মো. সুমন।
মামলার বাদী ওই কলেজছাত্রী কক্সবাজারের একটি কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
Read More News
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কনস্টেবল মো. সুমনের (বর্তমানে রাঙামাটি পুলিশ সুপার কার্যালয়ে কর্মরত) সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ওই কলেজছাত্রীর। এ সুবাদে বিয়ের কাবিনের কথা বলে গত ৭ জুলাই দুপুরের দিকে রামুর খুনিয়াপালং চেকপোস্ট সংলগ্ন সুমনের কক্ষে নিয়ে যায়। কাজী আসার অপেক্ষার অজুহাতে কক্ষে বসিয়ে রাখে, পরে ধর্ষণ করে। এরপর চেকপোস্টের পার্শ্ববর্তী একটি দোকানে বসিয়ে রেখে জরুরি কাজের কথা বলে পালিয়ে যায়। অবশেষে রাত ১১টার দিকে বিষয়টি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে ফোনে জানান ভিকটিম। তাঁর কথামত উখিয়া থানায় গেলে ভিকটিমকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন ওসি মর্জিনা আকতার। এরপর অভিযুক্ত ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তাঁকে থানার একটি কক্ষে আটকিয়ে রেখে ব্যাপক মারধর ও নির্যাতন চালানো হয়। এমনকি পায়ে রশি ও পরনের হিজাব দিয়ে চোখ বেঁধে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে রাখারও অভিযোগ আনেন ভিকটিম।
‘কনস্টেবল সুমনের সাথে যোগাযোগ না রাখার হুমকি দিয়ে দফায় দফায় মারধর করা হয়। এমনকি ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে চালান করে দেয়ার হুমকিও দেন ওসি। এর পরের দিন ৮ জুলাই আমার বাবার সাথে যোগাযোগ করেন ওসি। বাবা উখিয়া থানায় এসে আমাকে নিয়ে যান। কিন্তু আমার মোবাইল ফোনটি রেখে দেন ওসি।’
তিনি বলেন, বাসায় এসে চকরিয়ার একটি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। ৯ জুলাই ডাক্তার দেখাই চকরিয়ার একটি হাসপাতালে। আঘাতের চিহ্ন দেখে ডাক্তারও রীতিমতো অবাক হন। এরপর কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। ওই ছাত্রী বলেন, সুমন দেখে শুনে আমার সাথে সম্পর্ক করেছে। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে শারীরিক সম্পর্কও করেছে। তাই বলে আমাকে এমন নির্যাতন করবে মেনে নিতে পারছি না। মহিলা ওসি নিজে মেরেছে ঠিক আছে; কিন্তু পুরুষ পুলিশের দ্বারা নির্মম মারধর করা হয়েছে। আমার শরীর দেখলে বুঝা যায় কেমন নির্যাতন চালিয়েছে পুলিশ। আমি এর বিচার চাই। বিচারের জন্য আমি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।