জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলা বাতিলের আবেদন খালেদার

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে ও তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছেন প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, বুধবার (০৯ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি দাখিল করা হয়েছে।

আবেদনে দাবি জানানো হয়েছে, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এ ২০ ধারায় বলা হয়েছে- গেজেটভুক্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। এ মামলায় সে বিধান মানা হয়নি। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ছাড়াও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুই মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে।
Read More News

দুই মামলারই বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা হলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদ খান।এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ মামলার ৩২তম ও শেষ সাক্ষী হারুন-অর রশিদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আসামিপক্ষের জেরা চলছে। অসমাপ্ত জেরার দিন ধার্য রয়েছে বৃহস্পতিবার (০৯ মার্চ)।

অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় প্রথম সাক্ষী হিসেবেও সাক্ষ্য দিয়েছেন হারুন-অর রশিদ। তাকে আসামিপক্ষের জেরা ও নতুন সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে আগামী ২৪ মার্চ। ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়।

কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে মোট ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ খান।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ এ দুই দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় ও বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে চার্জ গঠন করা হয় খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর আট আসামির বিরুদ্ধেও।

২০১৪ সালের ৭ মে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন মামলা দুটির বিচারিক কার্যক্রম ঢাকার মেট্রোপলিটন দায়রা জজ আদালত ভবনের পরিবর্তে ঢাকা মহানগরের বকশিবাজার এলাকার কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালত ভবনে চালানোর আদেশ জারি করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *