অবশেষে রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের আগে ভিডিও করার কথা স্বীকার করলেন গ্রেফতার সাফাত আহমেদ। রবিবার রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনের গোয়েন্দাদের তিনি এ তথ্য জানান।
ডিবি কর্মকর্তাদের জেরার মুখে এদিন সাফাত বলেন, অভিযোগকারী দুই ছাত্রীর সঙ্গে আসা শাহরিয়ার নামে এক চিকিত্সককে মারধরের দৃশ্য তারা ভিডিও করেছে। আর ধর্ষণ করার আগে গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন ওই দুই ছাত্রীর সঙ্গে তাদের ওঠাবসার দৃশ্য ভিডিও করেছেন। তবে এর বাইরে ধর্ষণ করার সময় সেই দৃশ্য গাড়িচালক ভিডিও করেছে কি না তার জানা নেই।
যদিও রেইনট্রি হোলেটের ৭০১ নম্বর কক্ষে মোবাইল ফোনে ভিডিও করার দৃশ্য এখনও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।
Read More News
জিজ্ঞাসাবাদে সাফাত আরও জানান, বন্ধু নাঈম আশরাফের মাধ্যমেই সুন্দরী মডেলদের ডাকতেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই বন্ধুর মাধ্যমে তিনি সুন্দরী তরুণীদেরও সংগ্রহ করতেন। এরপর কোনো না কোনো হোটেলে পার্টির আয়োজন করতেন। আর সেখানেই রাতভর ফূর্তিতে মেতে উঠতেন তিনি। এসব পার্টি চলত গভীর রাত পর্যন্ত। কখনও কখনও ভোরের আলোয় ভাঙত তাদের সেই মিলনমেলা।
তিনি আরও জানান, প্রথম সারির সুন্দরী মডেল-আইটেম গার্লরা ছাড়াও মাঝে মধ্যে এ সারির বিদেশি অতিথিদের আনা হয় এসব জলসায়।
এর আগে, প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে সাফাত বাংলাদেশের সিনেমা জগতের ৪ জন নায়িকার সঙ্গে নিয়মিত অবৈধ সম্পর্ক থাকার কথা জানান। যাদের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে তিনি অনৈতিকভাবে মেলামেশা করতেন। এছাড়া প্রায় এক ডজন বান্ধবীর নাম ফাঁস করেছেন, যাদের সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্কের কথাও খোলামেলা স্বীকার করেছেন। এ সব বান্ধবীদের মধ্যে উঠতি কয়েকজন মডেলও রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, প্রতি রাতেই তিনি ও তার বন্ধুরা পার্টি করতেন। পাঁচ তারকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে আয়োজিত এসব পার্টিতে বন্ধু-বান্ধবীরা হাজির থাকতেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সাফাত জানান, তাদের ২০ থেকে ২২ জন বন্ধুর একটি গ্রুপ আছে। এ গ্রুপে তাদের বন্ধুদের মধ্যে দেশের বেশ কয়েকজন শিল্পপতি, রাজনৈতিক নেতা ও সমাজের প্রভাবশালীদের সন্তান রয়েছে। তারা রাত হলেই একটি স্থানে জড়ো হন। প্রতিরাতেই তারা পাঁচ তারকা হোটেলে বিভিন্ন পার্টি ছাড়াও রেসিং কার নিয়ে লং ড্রাইভে যেতেন। মাঝে মধ্যে ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ আশপাশের দেশে দল বেঁধে বান্ধবীদের নিয়ে ঘুরতে যেতেন।
প্রতিদিন তার হাত খরচের দুই লাখ টাকা তার বাবা দিতেন বলে দাবি করেন সাফাত। কখনো এর বেশি টাকার প্রয়োজন হলে ঢাকা শহরে আপন জুয়েলার্সের ৮টি শোরুমের যে কোনো একটিতে ফোন করে অতিরিক্ত টাকা আনিয়ে নিতেন। কখনো তার বাবা এ টাকা খরচের বিষয়ে প্রশ্ন তোলেননি।