বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাওর অঞ্চলকে আগামী ছয় মাসের জন্য ‘দুর্গত অঞ্চল’ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন।
আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলেন খালেদা জিয়া। হাওর পরিদর্শন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে হতাশ হয়েছেন তিনি।
Read More News
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বের হাওর অঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতিতে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রতিবেশী দেশ থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আগাম বন্যায় ব্যাপক শস্যহানিসহ গবাদি পশু, মাছ, জলজ প্রাণী এবং অন্যান্য সম্পদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতিতে সহায়-সম্বল হারিয়ে সেখানে এক অকল্পনীয় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। রোগে-শোকে, খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে মানুষ এক অবর্ণনীয় দুর্দশায় জীবন কাটাচ্ছে। তাদের কষ্ট বর্ণনার অতীত। বিপর্যয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিবের নেতৃত্বে সেখানে এক প্রতিনিধিদল পাঠাই। তাঁরা সেখানে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহস জুগিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির অবস্থা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং ত্রাণতৎপরতা চালিয়েছেন। বিএনপি প্রতিনিধিদল হাওর অঞ্চলে বিপর্যয় ও ক্ষয়ক্ষতির যে ভয়াবহ চিত্র দেখেছেন তার আলোকেই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাকে ‘দুর্গত অঞ্চল’ ঘোষণার আহবান জানাই। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, মানবিক বিবেচনা থেকেই এ আহবান জানানো হয়েছিল। পরে অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন এবং স্থানীয় জনগণের পক্ষ থেকেও একই দাবি উত্থাপন করা হয়।”
দুর্গত মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারে খালেদা জিয়া বলেন, নতুন ফসল না আসা পর্যন্ত হাওরের ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্যসহায়তা দেওয়া হোক। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি কৃষিঋণের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ এবং সরকারি-বেসরকারি সকল প্রকার ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত করা হোক। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ও বিনাসূদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দেওয়া হোক।
এক বছরের জন্য জলমহালের ইজারা বাতিল করে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ স্থানীয় দরিদ্রদের দেওয়া হোক। ত্রাণ, পুনর্বাসন ও চিকিৎসার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। হাওরের শস্য, মৎস্যসম্পদ, গবাদিপশু ও অন্যান্য জলজপ্রাণীর যে বিপুল হানি ঘটেছে, তা আমাদের জন্য এক জাতীয় বিপর্যয়ের শামিল। এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমি জাতীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা গ্রহণের আহবান জানাই।