প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা দুই মন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘আপনারা যতই ক্ষমতাধর হন না কেন, আইন সোজা চলে। আঁকাবাঁকা পথে চলে না। আমরা অনেক সহ্য করেছি। সংবিধান রক্ষায় যেকোনো আদেশ দিতে কুণ্ঠাবোধ করব না।’
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননাকর বক্তব্যের অভিযোগের বিষয়ে রোববার শুনানিকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে টক শোতে যাবেন, বিচার বিভাগ নিয়ে সমালোচনা করবেন। আপনি স্বীকার করেছেন অপরাধ করেছেন। আপনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। এখন কী হবে? টক শোতে যাবেন, বাড়াবাড়ি করবেন- এটা আর দেখতে চাই না। সংবিধানের ১৪৮ পড়েন। আপনি সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়েছেন। আপনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। এর পরিণতি কী হবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ, এগুলো ফৌজদারি আদালত অবমাননা। ডাকাতি মামলার আসামির যে রকম ফৌজদারি অপরাধ, এটাও একই অপরাধ। জনকণ্ঠের মামলায় তা বলে দিয়েছি।’
প্রধান বিচারপতি মীর কাসেমের মামলার বিষয়ে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি যদি ওই মামলা থেকে নিজেকে তুলে নিত তাহলে দেশে রায়ট লেগে যেত। পুরো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল হয়ে যেত। এখানে আমরা অনেক সিদ্ধান্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে দিয়েছি।’
দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে কামরুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হকের বক্তব্যে স্তম্ভিত হয়ে ৮ মার্চ আপিল বিভাগ তাদের তলব করেন। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে কেন কার্যক্রম শুরু করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন।
১৫ মার্চ দুই মন্ত্রীকে আপিল বিভাগে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্যের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। ওই দিন মোজাম্মেল হক আদালতে উপস্থিত হলেও সরকারি কাজে বিদেশে থাকায় কামরুল ইসলাম ছিলেন না। ওই দিন তাদের আইনজীবীদের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শুনানি মুলতবি করে ২০ মার্চ পুনর্নির্ধারণ করেন।
দুই মন্ত্রীই আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।