“কান্দা পাড়া, দৌলতদিয়া, টান বাজার, গাঙ্গিনাপাড়, রথখোলা, সন্ধ্যাবাজারের যৌন কর্মী আজ অভিজাত সাহেব পাড়ায়”
গত কয়েকদিন যাবৎ মিডিয়ার সুবাদে নারীদের অপকর্ম, অপকীর্তি দেখে নারী হিসেবে আমরা লজ্জিত।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সুন্দরী, চালচলনে চোস্ত, স্টাইলিশ নারীরা অনেকেই অভিজাত এলাকায় গড়ে তুলেছেন যৌন পল্লী। নারী আমদানি রফতানির অভয়ারন্য।
বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে কেবলমাত্র প্রাপ্ত বয়স্করা আদালতে ঘোষনা দিয়ে পেশাদার যৌনকর্মে নিজকে নিয়োজিত করতে পারে। আইন অনুসারে নিয়ন্ত্রিত হলেও পেশাটি বৈধ, তবে মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশ সমূহে এগুলো বিরল। পেশাদার যৌনকর্মীদের ব্যবহৃত বাড়ি, এলাকা, স্থান,স্থাপনা নির্দিষ্ট থাকে। যৌনকর্মীরা সাধারনত বিভিন্ন হোটেলে,পার্কে যারা ভাসমান,যৌনপল্লী ভিত্তিক নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যৌনসেবা দিতে পারে। আমাদের দেশে নিবন্ধিত যৌনপল্লী ১৪ টি। শতশত মানুষ যৌনসেবা নিতে আসে, কিন্তু সবাই ঘৃনা করে পতিতাকে এবং পতিতাপল্লীকে।।
মহামারী করোনা সারাবিশ্বের প্রতিটি ঘরে আজ হানা দিয়েছে। এমন কোন পরিবার নেই যে পরিবার করোনার ছোবলদেয়নি, খুব কম পরিবার আছে যে পরিবারে দু’একজনের মৃত্যু হয়নি।। সারা পৃথিবী যখন করোনা নিয়ে ব্যস্ত, সে সময়ে মেতে উঠেছে শিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত, উচ্চাভিলাসী, নৈতিকতা বিবর্জিত পতিতারা। হোটেল মোটেল বন্ধ থাকার কারনে তারা ফ্লার্ট ভাড়া নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ কর্মকান্ড বসাচ্ছে মদ,জুয়া, ক্যাসিনো, ডিজে ও মাদকের আসর।। নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ, নেশা, টাকার লোভ, উচ্চাভিলাস, সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি, অশ্লীল নাটক-সিনেমা, ডিজে, ক্লাব অনলাইন ভিত্তিক পর্নোগ্রাফি সমাজের একটি শ্রেনীকে আসক্ত করে ফেলেছে। সেখানে যোগ হয়েছে কিছু লেবাসধারী পতিতা।
Read More News
তাদের খদ্দের র্বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, মিডিয়ার কর্নধার ব্যক্তিগন, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, ধনীর দুলালেরা, অবৈধ কালো টাকার মালিক, দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বখে যাওয়া সন্তানেরা। ফলে অতিস্মার্ট নির্লজ্জ পতিতারা কোন কিছুই ভ্রুক্ষেপ করেনা, কাউকে পাত্তা দেয়না, তাদের হাত নাকি অনেক বড়।।
জালে আটকা পরছে দু’চারটা চুনোপুটি, রাঘব বোয়াল রুই কাতলারা ধরা ছোয়ার বাইরে। অসংখ্য পতিতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিভিন্ন পেশায়, বিভিন্ন এলাকায় তারা ঘৃন্য তারা জঘন্য। অনেকেই জড়িয়ে গেছে মাদক ব্যবসায়, কেউ মাফিয়া চক্রে, কেউ অস্র সরবরাহে।
বাংলাদেশে যখন হেফাজতে ইসলাম ও জঙ্গীরা মাথা চারা দিয়ে উঠেছিল, সারা দেশ ব্যাপী আক্রমন চালিয়ে হলি আর্টিজানের মতো জায়গায় হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ছিলো, তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চিরুনী অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করতে সফল ও সক্ষম হয়েছিলেন। অনেকেই এখন জেলখানায়। সময় এসেছে ঢাকা শহরের প্রতিটি এলাকায় চিরুনী অভিযানের। সমাজের অবক্ষয় রোধে ইতিপূর্বে প্রতিটি বিল্ডিং এর মালিককে, ফ্লাটের মালিকদের তাদের ভাড়াটিয়াদের বৃত্তান্ত দিতে প্রজ্ঞাপন জারী হয়েছিল, এখন তা বন্ধ। ফলে প্রমত্ত দেহপসারিনীরা মত্ত হয়েছে অবৈধ খেলায়। তারা কয়েক লক্ষ টাকায় বাড়ি নিচ্ছে, একা থাকছে, রাতের বেলায় ডুবে থাকছে মদ, জুয়া সহ দেহ ব্যবসায়।
সেতো পুরো বাড়ি দখল করে থাকেনা, নিশ্চয়ই তার আশে পাশে ভাল, সৎ ধর্মপরায়ন, অবৈধ কার্যকলাপ বিরোধী অভিজাত পরিবারের সজ্জন ব্যক্তি রয়েছেন তাঁরা ৯৯৯ এ ফোন করে জানাতে পারেন।
তারা ভয় পান জানাতে গিয়ে উল্টো হুমকীর ও বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হবেন কিন।
“হাঁ ওদের হাত নাকি অনেক বড়”
থানা, পুলিশ,মিডিয়া সব ওদের হাতের মুঠোয়। যে অভিযোগ করবে উল্টো তাকে বিপদে পরতে হবে।।
গতকাল আমরা এক নায়িকাকে দেখলাম সেন্ডোগেন্জী পরেই লাইভে এসেছে,ইতিপূর্বে সে লাইভে এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে মা ডেকে আকুল আবেদন জানিয়েছিল।তিনি যে মানবতার মা তিনি ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। মা তো ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে বখে যাওয়া এসব সন্তানের খবর নিতে পারেন না পারবেন ও না।। তবে অপরাধী কখনো ক্ষমা পাবেনা।
বেশীর ভাগ নষ্টা নারীদের দেখছি সমাজের নিম্নস্তর থেকে আসা।। তাদের নৈতিকতার অবক্ষয় রন্ধে রন্ধে, তারা লোভী, সেলিব্রেটি হওয়ার জন্য, টাকা কামানোর জন্য তারা সর্ট কার্ট পথ বেছে নেয়। তাদের ছোট কাল থেকেই স্বপ্ন থাকে সমাজের উচু স্তরে আসা। তাই যেকোন কিছুর বিনিময়েই ই তারা প্রতিষ্ঠিত হতে চায় সমাজের উচ্চশ্রেনীতে উন্নীত হতে চায়। অাভিজাত্যের হাওয়া লাগাতে অতি দ্রুত নিজেদের পরিবর্তিত করে, নাম বদলে,চুল বদলে রংবদলে অন্যরূপ ধারন করে।
এদের ধরার জন্য জাল বিছিয়ে রাখে মিডিয়ার কিছু কথিত মালিকেরা,প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা,ইয়াবা সহ মাদক ব্যবসায়ীরা, সাথে আমলারা।যে একবার যে ফাঁদে পা দিবে তার ফিরে আসার পথ থাকেনা,নীয়ন আলোর ঝলকানী,দামী বাড়ি, গাড়ী,বিদেশ ভ্রমন, সোনা গয়না তাদের লোভী,বেপরোয়া করে তুলে।
সিগনিফিকেন্ট পরিবারের ঐতিহ্যে লালিতরা কখনোই জালে পা দেয়না,পতিত হয়না। বিগত দিনে নায়ক নায়িকা,গায়ক গায়িকা,অভিনেতা অভিনেত্রী মডেল যাদের নৈতিক স্খলন ঘটেনি তাদের সবাই আজো শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করে।।
সময় এসেছে এদের বিরুদ্ধে সবাই এক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার, রুখে দাড়াবার। আমাদের সমস্ত এলাকায় সবার সোসাইটি রয়েছে। সোসাইটির সদস্য বৃন্দ একত্র হয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তুলতে হবে।। কোথায়, কাদের অবস্হান বের করা কঠিন কাজ নয়।
এসব পতিতা-দের খদ্দের কারা, পৃষ্ঠপোষক কারা, তাদের সনাক্ত করে আইনের কাছে সোপর্দ করা এখন সবার নৈতিক দায়িত্ব।আর এভাবেই শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে সাহেবপাড়া থেকে পতিতা পল্লীতে বা জেলখানায় তাদের স্থানান্তরের মাধ্যমে সমাজ স্বস্তি পেতে পারে ।
আইনের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল থেকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে অপরাধী যেই হোকনা কেন তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা না দিয়ে আইনের আওতায় এনে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির ব্যবস্হা করতে হবে।
আমরা এভাবেই আমরা পেতে পারি সুন্দর, পরিচ্ছন্ন, পতিতা মুক্ত, জঙ্গী মুক্ত মাদকমুক্ত, সুন্দর বাংলাদেশ।।
জেসমিন সুলতানা
এডভোকেট
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট।