আফগানিস্তানে এলাকা দখলে নিচ্ছে তালেবান

আফগানিস্তানে প্রতিদিন এলাকা দখলে নিচ্ছে তালেবান। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন প্রদেশে হচ্ছে তীব্র লড়াই। এর মধ্যে মঙ্গলবার দেশটির বামিয়ান প্রদেশের সায়ঘান জেলা, গজনির মালিস্তান, ফারাহ প্রদেশের পুর চমন এবং খোস্ট প্রদেশের মুসা খেলের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। সংঘর্ষ চলছে ফারিয়াব প্রদেশেও।

সম্প্রতি তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এমন অব্যাহত অভিযানে আফগান কমান্ডোদের বিভিন্ন ফাঁদে ফেলছে তালেবান। মঙ্গলবার ভোররাতে এ ধরনের এক পরিস্থিতিতে আফগান কমান্ডোদের সঙ্গে ছিলেন রয়টার্সের একজন সাংবাদিক, তার ভাষ্যে উঠে এসেছে ভয়াবহ পরিস্থিতির এমন চিত্র।
Read More News

এদিন ভোররাতে ঘাঁটিতে ফেরার পরই ক্লান্ত একদল আফগান কমান্ডো জরুরি বার্তা পেয়ে কান্দাহারের শহরতলীতে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্ধারে দ্রুতগতিতে আবার বের হয়ে যান।

পুলিশ কর্মকর্তা আহমদ শাহ ১৮ ঘণ্টা ধরে যে চেকপোস্টটিতে আটকা পড়ে আছেন স্পেশাল ফোর্সের ৩০ থেকে ৪০ জন কমান্ডোকে বহনকারী এক লাইনে থাকা হামভি গাড়ির বহরটি সেদিকে এগোতেই স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রের গুলির মুখে পড়ে।

গাড়িবহরটি তা অগ্রাহ্য করে শাহের অবস্থানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে দুপক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় শুরু হয়ে যায়। এরমধ্যেই তড়িঘড়ি করে শাহকে একটি হামভিতে তুলে নেওয়া হয়।

এরপরই মুহুর্মুহু ভারী বিস্ফোরণ শুরু হয়। গাড়িবহরের আটটি হামভির মধ্যে প্রথম তিনটিতে রকেট আঘাত হানলে সেগুলো অচল হয়ে যায়। বিভ্রান্তির মধ্যেই অচল হামভিগুলোর কমান্ডোরা ট্রাকে ওঠার চেষ্টা করে। এ সময় বাম দিকের একটি কবরস্থান থেকে আর ডান দিকে মোটা ইউক্যালিপটাস গাছগুলোর আড়াল থেকে গুলি ছুটে আসতে থাকে। গুলিবৃষ্টির হামভিগুলোর ওপরে থাকা গানাররা প্রায় অদৃশ্য সন্দেহভাজন তালেবান যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বেপরোয়াভাবে গুলি ছুড়তে থাকেন।

বাকি হামভিগুলোও বেশ কয়েকটি রকেট চালিত গ্রেনেডের আঘাত সহ্য করে। কমান্ডোতে ঠাসা গাড়িটির ভেতরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ প্রতিধ্বনিত হয় আর গাড়িগুলো ভীষণভাবে কেঁপে ওঠে।

আফগান সেনারা বলছেন, বিদ্রোহীদের হিট অ্যান্ড রান কৌশলের কারণে তাদের সঙ্গে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়েছে। যেখানে বেসামরিকের সংখ্যা অল্প সেখানে যুদ্ধবিমানগুলো কভার দিতে পারলেও শহর এলাকায় এ ধরনের কিছু করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

এদিকে দখলে নেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই আফগানিস্তানের তিনটি স্থলবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু করেছে তালেবান। একই সঙ্গে সংগঠনটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রচুর অর্থ টোল হিসেবে আদায় করছে। হেরাত প্রদেশের বেসরকারি খাতের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আফগানিস্তানের গণমাধ্যম টোলো নিউজ এ তথ্য জানায়।

তবে কতদিন এ টোল আদায় তালেবান অব্যাহত রাখতে পারবে তার নিশ্চিয়তা নেই। কেননা দ্রুতই নিরাপত্তা বাহিনী এবং গণপ্রতিরোধ বাহিনীর সদস্যরা তালেবানের কবল থেকে এসব এলাকা উদ্ধারে অভিযানে নামতে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *