সম্প্রতি ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা সুলতানা তাম্মির বিয়ে হয়। এর পরই নতুন করে বিতর্ক ওঠে তামিমা সুলতানা তাঁর আগের স্বামীকে তালাক না দিয়ে নাসিরকে বিয়ে করেছেন। তবে নাসিরের স্ত্রী তামিমা তাম্মি দাবি করেছেন, চার বছর আগেই সাবেক স্বামী রাকিব হাসানকে ডিভোর্স দিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তামিমা তাম্মি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান বলেছেন, আমি তালাক না দিয়ে বিয়ে করেছি। আমি শরিয়ত ও আইন মোতাবেক ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর ডিভোর্সের আবেদন করি। এরপর ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিল সেই তালাকটি কার্যকর হয়।
Read More News
তামিমা আরও বলেন, রাকিব কেন এটা করেছেন, এটা আপনাদের বোঝা হয়ে গেছে। প্রত্যেকটি কথার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। বিভিন্ন ফেসবুক বা মিডিয়ায় আমাদের আইডি ফেইক করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে। কিছু থাকলে আমরা আপনাদের ফেসবুকের মাধ্যমে জানাব। দয়া করে এসব থেকে বিরত থাকুন।
তামিমা তাঁর সন্তানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ডিভোর্সের পর মেয়ে আমার কাছে ছিল। এখনও মেয়ের সঙ্গে ফোনে, ভিডিওকলে যোগাযোগ হয়। ও এখন স্কুলে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে আমার মেয়েকে রাকিব বাসা থেকে নিয়ে যায়। আমি যখন ফ্লাইটে থাকি তখন আমাকে আমার মা জানান। এরপর আমার মা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
তামিমা বলেন, আমি দেশে না থাকায় এ বিষয়ে কোনো আইনি স্টেপ (পদক্ষেপ) নিতে পারিনি। নয় মাস আগে নাসির আমার ছবি তাঁর ইনস্টাগ্রাম পেজে দেয়। তখন অনেক আলোচনার জন্ম নেয়। নাসির পোস্ট দিয়ে বলেছিলেন, এই সে মেয়ে, যাকে আমি ঘটা করে বিয়ে করব। আর তিন মাস আগে নাসির আরেকটা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল, আমরা ধুমধাম করে বিয়ে করছি। এক বছর যাবৎ সব জায়গায় কন্টিনিউয়াসলি জানাচ্ছে। আমি যেহেতু এক জায়গায় চাকরি করি তাই বিষয়টি আমি কাউকে জানাইনি।
তামিমা আরও বলেন, রাকিব যা করছেন, তা পাবলিক প্ল্যাটফর্ম পাওয়ার জন্য। আমি কোনো ভুল করিনি। আমার বাসায় কোনো উকিল নোটিশ, আইনজীবী বা পুলিশ আসেনি। এগুলো মিথ্যা কথা। আমরা ক্লিয়ার দেখে সব কথা আপনাদের জানাচ্ছি।
এর আগে আজ বুধবার ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্বামী মো. রাকিব হাসান। মামলায় আগের বিয়ে গোপন রেখে নতুন বিয়ে, অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে নিয়ে যাওয়া, ব্যাভিচার ও মানহানির অভিযোগ আনা হয়েছে। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে রাকিব হাসান এ মামলা করেন।
রাকিবের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, মামলায় তামিমা সুলতানা তাম্মিকে এক নম্বর ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪৯৪, ৪৯৭, ৪৯৮, ৫০০ এবং ৩৪ ধারায় এ মামলা করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদীর সঙ্গে ১ নম্বর আসামি তামিমা সুলতানার ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক ৩,০০,০০১ (তিন লক্ষ এক) টাকা দেনমোহর ধার্যে বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং রেজিস্ট্রি হয়। বিয়ের পর থেকে বাদী ও ১ নম্বর আসামি স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার করতে থাকেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে বাদীর ঔরসে ১নং আসামির গর্ভে একজন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, যার নাম রাখা হয় তোবা হাসান। বয়স-৮ বছর। ১ নম্বর আসামি (তাম্মি) পেশায় একজন কেবিন ক্রু। তিনি সৌদি এয়ারলাইন্সে কর্মরত। চাকরির সুবাদে তিনি গত ১০ মার্চ সৌদিতে গিয়েছিলেন। করোনা মহামারির কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে সেখানেই অবস্থান করতে থাকেন।
উল্লেখ্য, গেল ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন। বিয়েকে স্মরণীয় করতে ভালোবাসা দিবসটিকেই বেছে নেন তিনি। নাসিরের স্ত্রীর নাম তামিমা তাম্মি। পেশায় বিমানবালা। কিন্তু বিয়ের সপ্তাহ পার না হতেই চরম বিতর্ক শুরু হয়েছে।