ব্যবহারকারীদের নতুন ‘টার্মস অব সার্ভিস’ বা সেবা পাওয়ার শর্তাবলী মানতে বাধ্য করতে চলেছে অনলাইন বার্তা আদান-প্রদানের জনপ্রিয় অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। আগামী বছর অ্যাপটি তাদের শর্তাবলীতে পরিবর্তন আনছে। হোয়াটসঅ্যাপের আপডেট ও অন্যান্য বিষয়ে তথ্য ফাঁসকারী টুইটার অ্যাকাউন্ট ওয়াবেটা ইনফো জানিয়েছে, শর্ত না মানলে অ্যাপটি ব্যবহার করা যাবে না। হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ‘টার্মস অ্যান্ড প্রাইভেসি পলিসি’ আপডেটের স্ক্রিনশট শেয়ার করেছে ওয়াবেটা ইনফো। তাতে দেখা যায়, নতুন শর্তাবলী না মানলে অ্যাপটিতে প্রবেশাধিকার হারাবেন ব্যবহারকারীরা।
নতুন শর্তগুলো কার্যকর হবে আগামী বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে। সেদিনের পর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে হলে, ব্যবহারকারীদের নতুন শর্তগুলো অবশ্যই মানতে হবে। অথবা চাইলে ব্যবহারকারীরা যেকোন সময় একাউন্ট ডিলিট করে দিতে পারবেন।
ইন্ডিপেন্ডেন্টের এক প্রশ্নের জবাবে, নতুন পরিবর্তনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র জানান, নতুন এই পরিবর্তন প্ল্যাটফর্মটিতে ব্যবসা কিভাবে চলবে ও ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কিভাবে যোগাযোগ করবে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
Read More News
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নেয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। এরপর থেকেই অ্যাপটির পরিচালনা পদ্ধতি সমালোচিত হয়ে আসছে। ২০১৮ সালে হোয়াটসঅ্যাপের প্রতিষ্ঠাতা জানকৌম গোপনীয়তা ও তথ্য নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের মধ্যে প্ল্যাটফর্মটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পদত্যাগ করেন।
ফেসবুকের কাছে অ্যাপটি বিক্রির আগে এক ব্লগ পোস্টে তিনি লিখেন, আজকাল প্রতিষ্ঠানগুলো আপনার, আপনার বন্ধু ও আপনি কোন কোন বিষয়ে আগ্রহী তার সবটা জানে। তারা এসব ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন বিক্রি করে। তিনি আরো লিখেন, বিজ্ঞাপন বিক্রিকারী প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলীদের একটি বড় অংশ উপাত্ত সংগ্রহ করতে ও কিভাবে আরো ভালো করে সংগ্রহ করা যায় তার জন্য কোড লেখার কাজে নিয়োজিত থাকে। মনে রাখবেন, বিজ্ঞাপন জড়িত থাকা মানেই ব্যবহারকারী হচ্ছে পণ্য।
কৌম তার পদত্যাগের পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ উল্লেখ করেননি। তবে সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে লেখা হয়, বিজ্ঞাপনে ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার নিয়ে ফেসবুকের সঙ্গে একমত বিরোধতা পদত্যাগের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
প্রসঙ্গত, ফেসবুকের কাছে অ্যাপটি বিক্রি হওয়ার পর কৌমের পাশাপাশি, হোয়াটসঅ্যাপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান এক্টনও প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে যান। পরবর্তীতে নিজের প্রস্থান নিয়ে ফোর্বসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আমি বেশি লাভের জন্য আমার ব্যবহারকারীদের তথ্য বিক্রি করেছি। আমি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছাড় দিয়েছি। বাকি জীবন এটা নিয়েই বাঁচতে হবে আমাকে।