স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের (৭৬) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। দীর্ঘ চার বছর ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে আজ শুক্রবার ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলী যাকের মৃত্যুবরণ করেন।
বরেণ্য অভিনেতা আলী যাকেরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আলী যাকেরের মালিকাধীন বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আলী যাকেরের মরদেহ আজ বেলা ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নেওয়া হবে।
Read More News
এর আগে ১৯ নভেম্বর জানা গিয়েছিল, নানাবিধ সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এই অভিনেতা। তখন রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এরপর ২২ নভেম্বর সেখান থেকে বাসায় ফিরেছিলেন তিনি।
গত পরশুদিন হঠাৎ করে শরীরের অবস্থার অবনতি হলে বুধবার ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয় আলী যাকেরকে। সেখানে নমুনা পরীক্ষার পর সেদিনই তাঁর করোনা পজিটিভ আসে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার ভোরে না ফেরার দেশে চলে গেছেন আলী যাকের।
১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। গত ৬ নভেম্বর নিজ বাসায় ঘরোয়া আয়োজনে ৭৬তম জন্মদিন পালন করেন এই অভিনেতা।
১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরি থেকে ম্যাট্রিক পাস করে নটরডেমে ভর্তি হন আলী যাকের। সেখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন তিনি। এরপর সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক করেন। অনার্স পড়াকালেই ছাত্ররাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। ছাত্র ইউনিয়ন করতেন।
আলী যাকের তাঁর অভিনয়জীবন শুরু করেন ১৯৭২ সালে। আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকটিতে প্রথম অভিনয় করেন, যার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনে। এরপর জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘বহুব্রীহি’ ও ‘আজ রবিবার’-এ অভিনয় করে আলোচনায় আসেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক পেয়েছেন এই গুণীজন। বর্তমানে আলী যাকের বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক থ্রিসিক্সটির কর্ণধার। আলী যাকের ১৯৭৫ সালে অভিনেত্রী সারা যাকেরকে বিয়ে করেন।