বরিশালে ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি দুর্নীতি মামলায় সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র (সাবেক পৌর চেয়ারম্যান) ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব কামালসহ ৫ জনকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সাথে সাবেক মেয়র কামাল এবং কথিত ঠিকাদার মো:জাকির হোসেনকে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
Read More News
বরিশাল বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক মো: মহসিনুল হক সোমবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে ৫ আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অপর ৪ জন হলেন তৎকালীন বরিশাল পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইছাহাক, তৎকালীন সহকারী প্রকৌশলী (সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) খান মো: নুরুল ইসলাম, পৌরসভার সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: আব্দুস ছাত্তার এবং কথিত ঠিকাদার মো: জাকির হোসেন।
আদালতের সহকারী মো: হারুন উর রশিদ মামলার এজাহারের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ১৯৯৫-৯৬ সালে বরিশাল টিএন্ডটি’র ভূগর্ভস্থ ক্যাবল স্থাপনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে ৪৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু কোন প্রকার টেন্ডার আহ্বান না করে এবং রাস্তার কাজ না করেই হাই ইয়ং নামে একটি কথিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে ৪টি চেকের মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন আসামীরা। বাস্তবে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্ব পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন।
এ ঘটনায় ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর জেলা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তা মো: আব্দুল বাসেত বাদী হয়ে ৫ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক আব্দুল বাসেত ২০১১ সালের ১৯ জুলাই আহসান হাবিব কামালসহ ৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। পরে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে ২৬ জনের মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক উপরোক্ত রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার পরপরই কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ।
এদিকে রায় ঘোষণার পর সংক্ষুব্ধ হয়ে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের অনুসারীরা আদালত চত্বরে এবং ফজলুল হক এভিনিউ এলাকায় বিক্ষোভ করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান কামালের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান নান্টু এবং অ্যাডভোকেট মহসিন মন্টু।
আহসান হাবীব কামাল দীর্ঘদিন বরিশাল পৌরসভার ওয়ার্ড কমিশনার, প্রশাসক এবং নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভারপ্রাপ্ত মেয়র ছাড়াও ২০১৩ সালে সিটি নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে আর প্রতিদন্ধীতা করেননি।