শাহাবুদ্দিন মেডিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

করোনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে রাজধানীর গুলশানের শাহাবুদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল আল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ সোমবার দুপুরে বনানীর একটি হোটেল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‍্যাব সূত্র জানিয়েছে। গ্রেপ্তার ফয়সাল হাসপাতালটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিনের বড় ছেলে।

এর আগে র‍্যাব ফয়সালসহ সাহাবুদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আবুল হাসনাত ও হাসপাতালটির ইনভেন্টরি কর্মকর্তা শাহরিজ কবির সাদিসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে র‍্যাব বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এজাহারে সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগে আনা হয়েছে, নেগেটিভ রোগীকে করোনা পজিটিভ রোগী বলে চিকিৎসা দেওয়া, পরীক্ষা না করে ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া ও অনুমোদন না নিয়েই র‍্যাপিড কিট দিয়ে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।
Read More News

এছাড়া আবুল হাসনাত ননকোভিড ও কভিড রোগীদের এক পরীক্ষা চারবার দেখিয়ে বিল করেছেন। একাধিকবার করোনা পরীক্ষার সনদ রোগীর ফাইলে সংযোজিত পাওয়া যায়নি। মামলায় আরো চার-পাঁচজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বিবরণে বলা হয়, হাসপাতালটি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করে আসছিল রোগীদের কাছে। এ ঘটনায় সারওয়ার আলম প্রতিষ্ঠাটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। হাসপাতালের পাঁচটি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। একটিতে তল্লাশি চালিয়ে পাঁচটি মেয়াদোত্তীর্ণ সার্জিক্যাল টিউব পান। এগুলোর একটি ২০০৯ সালে, দুটি ২০১১ সালে এবং একটি ২০২০ সালের এপ্রিলে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। এসব টিউব সাধারণত অপারেশনে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার সময় রোগীর শ্বাসনালিতে ঢোকানো হয়। এছাড়া হাসপাতালের লাইসেন্স গত বছর শেষ হয়ে যায়। এসবের সঙ্গে সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ফয়সাল, সহকারী পরিচালক আবুল হাসনাত ও শাহরিজ কবির জড়িত।

তবে হাসপাতাল ফার্মেসির লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ থাকার কথা স্বীকার করলেও র‍্যাবের অভিযানে উঠে আসা অন্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতালটির পরিচালক (কলেজের অধ্যক্ষ) অধ্যাপক ডা. মো. জাফরউল্লাহ আজ সোমবার হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাহাবউদ্দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ থাকার প্রশ্নই ওঠে না।

আমরা অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে রোগীদের জন্য ওষুধ ব্যবহার করি। তবে হাসপাতাল ফার্মেসির একটি ত্রুটি ছিল, সেটি হলো- এর লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, তা রিনিউ (নবায়ন) করা হয়নি। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের বিষয়টি আমার নলেজেই নেই, ধারণায় নেই। এটা কীভাবে এলো আমরা জানি না।

সুস্পষ্টভাবে আপনাদের অবগতির জন্য জানাতে চাই যে, আমাদের হাসপাতালে কখনোই সার্জিক্যাল হ্যান্ডগ্লাভস দ্বিতীয় বার ব্যবহার করা হয় না। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে পূর্ব-প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে কিছু সার্জিক্যাল হ্যান্ডগ্লাভস পাউডার মিশ্রিত করে রাখা হয়। যাতে যেকোনো অপারেশনেই দ্রুত সেগুলো ব্যবহার করা যায়।

হাসপাতালের লাইসেন্সের মেযাদ ২০১৯ সালের ৩০ জুন শেষ হলেও তা নবাযনের জন্য প্রয়োজনীয কাগজপত্র ও ফি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। নবায়নের বিষয়টি চলমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *