সুমাইয়া হত্যায় এবার স্বামী-শ্বশুর গ্রেপ্তার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী সুমাইয়া হত্যার প্রধান দুই আসামি তাঁর স্বামী মোস্তাক হোসেন ও শ্বশুর জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার ভোরে বগুড়া জেলার নন্দিগ্রাম এলাকা থেকে মোস্তাককে এবং সকালে রাজশাহীর বাঘা এলাকা থেকে জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, গত সোমবার সুমাইয়ার মৃত্যুর পর রাতেই তাঁর মা নুজহাত সুলতানা মোস্তাকসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপরই অভিযান চালিয়ে সুমাইয়ার শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এর আগেই পালিয়ে যান সুমাইয়ার স্বামী ও শ্বশুর। তাঁদের গ্রেপ্তারে আটটি টিম গঠন করে অভিযান চালানো হয়।
Read More News

নিহত সুমাইয়া শহরের বলাড়িপাড়া মহল্লার সিদ্দিকুর রহমানের মেয়ে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। সম্প্রতি তাঁর পড়াশোনা শেষ হলেও মাস্টার্সের ফল প্রকাশিত হয়নি। সিদ্দিকুর রহমান এলাকায় ইসলামি বক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল সুমাইয়া প্রেম করে হরিশপুর গ্রামের মোস্তাককে বিয়ে করেন। সুমাইয়ার বাবা সিদ্দিকুর রহমান মেয়ের দিকে তাকিয়ে বেকার জামাই মোস্তাকের চাহিদা পূরণ করে আসছিলেন। প্রায় ৮ মাস আগে সিদ্দিকুর রহমান মারা যাওয়ার পরও জামাইয়ের চাপ অব্যাহত ছিল। বাড়ি ভাড়ার টাকায় সংসার চালিয়ে দুই ছেলের খরচ, জামাইয়ের চাহিদা পূরনে হিমশিম খাচ্ছিলেন সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা।

এ কারণে চাকরি করে সংসারের হাল ধরতে চেয়েছিলেন সুমাইয়া। তিনি বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু বেকার স্বামী মোস্তাক তা মেনে নিতে চায়নি। বার বার শারীরিক নির্যাতন চালাত সুমাইয়ার ওপর। সোমবার সকালেও সুমাইয়ার ওপর নির্যাতন চালালে সংজ্ঞাহীন সুমাইয়াকে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে সবাইকে জানায়। এ ঘটনায় প্রথমে কোনো পক্ষ মামলা করতে রাজি হয়নি। পরে নাটোর থানা পুলিশ একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে মায়ের কাছে হস্তান্তর করে। বিকালে শহরের গাড়িখানা গোরস্থানে সুমাইয়াকে দাফন করা হয়।

পরে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাঁর সন্দেহ হলে তিনি নিহত সুমাইয়ার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে সোমবার রাত ১টায় নিহত সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা বাদী হয়ে জামাই মোস্তাক ও ওই পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে মোস্তাকের মা সৈয়দা মালেক ও বোন জাকিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *