প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রতি জনগণকে আস্থা ও বিশ্বাসে অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ কোন কিছুর কাছেই হার মানবে না, এমনকি করোনা ভাইরাসের কাছেও নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই আমাদের মানুষের মধ্যে যেন একটা আস্থা থাকে, বিশ্বাস থাকে, সেই বিশ্বাস-আস্থাটা ধরে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা হার মানবো না, মৃত্যু তো হবেই, মৃত্যু যেকোনো সময় যেকোনো কারণে হতে পারে। কিন্তু তার জন্য ভীত হয়ে হার মানতে হবে? এ ধরনের একটা অদৃশ্য শক্তির কাছে, এটাতো হতে পারে না। সেজন্য আমাদেরও সেভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
দেশ ডিজিটাইজেশনের সুবাদে ভিডিও কনফারেন্স আয়োজনের কারণে জনসমাগমে না গিয়েও সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সুবিধার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে ডিজিটাল পদ্ধতি আছে বলে আমি মানুষের কাছে যেতে পারছি, কথা বলতে পারছি এবং বার বার যাচ্ছি।’
Read More News
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যা যা নির্দেশনা আছে, সেগুলো মেনে চলে নিজের জীবনকে চালাতে হবে। কারণ, নিজেকে সুরক্ষিত রাখা মানেই অপরকেও সুরক্ষিত রাখা। সেটাও মাথায় রাখতে হবে, সেটা যেন সবাই করেন।’
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এসএসএফ সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই বাহিনী আমাদের সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনী এবং আনসার ও ভিডিপি সকলের মিলিত একটি সংগঠন। যেহেতু, সকলের মিলিত একটি সংগঠন, তাই, এখানে একে অপরকে জানার ও বোঝার সুযোগ রয়েছে, কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমি মনে করি, এটা একটা চমৎকার কম্বিনেশন।’
তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এই বাহিনীর সদস্যদের সন্তানতুল্য আখ্যায়িত করে স্নেহমাখা কন্ঠে সরকার প্রধান তাঁদের ‘তুমি’ সম্বোধন করেন এবং বলেন, ‘তোমরা যেমন আমার নিরাপত্তার জন্য চিন্তা করো আমিও ঠিক তোামাদের নিরাপত্তার জন্য সবসময় চিন্তা করি।’
তিনি বলেন, ‘তোমরা সুরক্ষিত থাক, সেটাই আমি চাই। কারণ, তোমাদের জীবনের মূল্যটা অনেক বেশি, তোমাদেরতো ভবিষ্যত সামনে পড়ে রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমরা নিরাপদ থাক, সেজন্য সব সময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে দোয়া করি। কারণ, তোমরা যেভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করো তাতে তোমাদের কর্ম দক্ষতায় সবাই মুগ্ধ।’
করোনা ভাইরাসের প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগে যেভাবে পালন করতে সেভাবে হয়তো করা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়মটা মেনে যতটুকু উৎসব করা যায় তোমরা করবে। সেটাই চাই, কারণ, জীবন মৃত্যু খুব পাশাপাশি।’
তিনি সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং সর্বশেষ সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহাম্মদ কামরানের মৃত্যুর কথা স্মরণ করে বলেন, ‘একদিকে যেমন আমরা মুত্যুর খবর পাই অন্যদিকে অন্য কাজও করতে হয়। এটাই আমাদের জীবন।’
অতীতে দু’বার গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন কামরান-সেকথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাতও কামনা করেন।
যেকোন পরিস্থিতিতেই প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে এ বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য মহাপরিচালক এসএসএফকে তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।