আজ থেকে আনুমানিক সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগে মিসর ওব্যাবিলনে উৎপত্তি হয় সূর্যঘড়ির। গোলাকার চাকতিতে একটি নির্দেশক কাঁটা ও দাগ কাটা সময়ের ঘর, এ নিয়েই সূর্যঘড়ি।
খ্রিস্টপূর্ব ষোড়শ শতকে মিসরে উৎপত্তি হয় পানিঘড়ির। বালিঘড়ির মতো করে কাজ করা এই ঘড়িটির নাম রাখা হয় ক্লেপসাড্রা। একটি বড় পাত্র থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় একটি ছোটপাত্রে পানি পড়ার মাধ্যমেই এগিয়ে চলে সময়ের কাঁটা। নিচের ছোট পাত্রের সঙ্গে জুড়ে থাকে একটি খাঁজযুক্ত দণ্ড। ওটাই একটু একটু করে ঘোরাতে থাকে সময়ের গিয়ার। পানিঘড়ির হাত ধরেই আসে দিন, মাস ও ঘণ্টার ধারণা।
গ্রিকরাই প্রথম বছরকে ১২ ভাগে ভাগ করে। এরপর উপবৃত্তাকার কক্ষপথকে ৩৬০ ডিগ্রি ধরে তাকে ১২ দিয়ে ভাগ করেই পাওয়া গেল মাসের ৩০ দিন।
Read More News
মিসরীয় ও ব্যাবিলনীয়রা সূর্যের উদয়-অস্ত নিয়ে দিনকে দুটো সমান ভাগে ভাগ করল।
এভাবে এলো ১২+১২ = ২৪ ঘণ্টা। সে সময় তাদের সংখ্যা গণনার ভিত্তি ছিল সেক্সাজেসিমাল তথা ৬০। আর এ কারণেই ঘণ্টা ও মিনিট ভাগ হলো সমান ৬০টি ভাগে।
জার্মানির পিটার হেনলেইন ১৫১০ সালে প্রথম স্প্রিং চালিত ঘড়ি আবিষ্কার করেন। তবে ওটা নিখুঁত সময় দিতে পারত না। এ সময় আরেক জার্মান গবেষক জোস্ট বার্জিও তৈরি করেন আরেকটি যান্ত্রিক ঘড়ি যেখানে মিনিটের কাঁটা ছাড়া আর কোনো নির্দেশক ছিল না তাতে।
১৬৫৬ সালে পেন্ডুলাম চালিত প্রথম কার্যকর ঘড়ি আবিষ্কার করেন নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান হাইজেন। ডানে-বাঁয়ে হেলে-দুলে বেশ ভালোভাবেই ঘুরিয়ে দিত মিনিট ও ঘণ্টার খাঁজকাটা চাকতিগুলো। পরে ১৯০৬ সালে পেন্ডুলাম ক্লকের পিছনে প্রথমবারের মতোজুড়ে দেওয়া হয় ব্যাটারি।
ঘড়ির ইংরেজি নাম ক্লকের পেছনেও কিন্তু অবদান রয়েছে এই পেণ্ডুলাম ঘড়ির।
আজ থেকে প্রায় ৭০০ বছর আগে লাতিন শব্দ ‘ক্লক্কা’ বা ঘণ্টি থেকে উদ্ভব হয় ইংরেজি ক্লক শব্দটির। এদিকে আধুনিক কোয়ার্টজ ঘড়ির জন্ম হয় বিংশ শতকে।
অবশেষে ডাচ জ্যোতির্বিদ ক্রিশ্চিয়ার হাইজেন্স ১৬৫৭ সালে এসে সম্পূর্ণ নির্ভুলভাবে মিনিট, সেকেন্ড ও ঘণ্টা নির্দেশকারী উন্নতমানের যান্ত্রিক ঘড়ির নকশা করেন।
বিদ্যুৎ কিংবা চাপ প্রয়োগে একটি নির্দিষ্ট ছন্দে কাঁপতে পারে কোয়ার্টজ ক্রিস্টাল ধাতু এ ধর্মকে কাজে লাগিয়ে ১৯২০ সালে আসে প্রথম কোয়ার্টজ ক্রিস্টাল ঘড়ি। এরই ধারাবাহিকতায় আসতে থাকে একের পর এক আধুনিক ও দামি ঘড়ি।