নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ‘পুনঃঅর্থায়ন স্কিম ২০২০’ নামে একটি তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (২০ এপ্রিল) এ ব্যাপারে একটি গাইড লাইন তৈরি করে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে দেশের নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের আয় রোজগারের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছেন না। যদিও গ্রামীণ অর্থনীতিতে দেশের নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অবদান অনস্বীকার্য।
Read More News
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ৩ হাজার কোটি টাকার আরেকটি পুনঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই তহবিল থেকে নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক বা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা ঋণ নিতে পারবেন। এই তহবিলের সুদহার হবে ৯ শতাংশ। ক্ষুদ্র ঋণদানকারী এনজিওদের মাধ্যমে এই ঋণ বিতরণ করা হবে। এজন্য এ তহবিলের সুদের হারও অন্যান্য তহবিল থেকে বেশি।
ব্যাংকগুলো ১ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে তা সাড়ে ৩ শতাংশ মাইক্রোক্রেডিট অথরিটি অনুমোদিত ক্ষুদ্র ঋণদানকারী এনজিওগুলোকে ঋণ দেবে। আর গ্রাহক পর্যায়ে এনজিওগুলো ৯ শতাংশ পর্যন্ত সুদ আদায় করতে করতে পারবে এনজিওগুলো। এই সুদহার ক্রমহ্রাসমান পদ্ধতিতে হিসাবায়ন করতে হবে। সর্বোচ্চ ১ বছর মেয়াদে এই তহবিলের ঋণ নিতে পারবেন মানুষেরা। তবে আগে খেলাপি হলে কেউঋণ নিতে পারবেন না।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, নিম্ন আয়ের পেশাজীবি ও কৃষকরা একক নামে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপভিত্তিক সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা একক নামে ১০ লাখ টাকা এবং গ্রুপভিত্তিক প্রকল্পের নামে ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। এই তহবিলের ঋণের তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট।
এখন পর্যন্ত করোনার প্রকোপ ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অন্তত ৬ ধরনের ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে নিম্ম আয়ের মানুষের তহবিলের সুদহার সবচেয়ে বেশি ৯ শতাংশ। কৃষকদের জন্য গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিলের সুদহার ৪ শতাংশ। বড় শিল্প ও সেবাখাতের প্রতিষ্ঠানের ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের সুদহার সাড়ে ৪ শতাংশ। সমপরিমান সুদ ভর্তকী দেবে সরকার। কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্পের ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিলের সুদহার ৪ শতাংশ। এর বাইরে ৫ শতাংশ সুদ ভর্তৃকী দেবে সরকার।
রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের আকার সাড়ে ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা বাড়িয়ে সুদহার করা হয়েছে ২ শতাংশ। আর রপ্তানিকারকাদের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রিশিপমেন্ট তহবিলের সুদহার হার ৬ শতাংশ। আর শ্রমিকদের বেতন দিতে রপ্তানমুখী শিল্প মালিকদের জন্য গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকার সুদবিহীন তহবিলের এককালীন সার্ভিস চার্জ ২ শতাংশ।