মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও স্বল্প পরিসরে চালু রয়েছে ব্যাংক। দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণের সেবার জন্য ব্যাংকাররা নিয়মিত অফিস করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের যাতায়াতের জন্য ব্যবস্থা করা হয়নি কোনো যানবাহনের। আর এ কারণে প্রতিদিনই অফিসগামী ব্যাংকারদেরকে পোহাতে হচ্ছে ঝক্কি-ঝামেলা। ব্যাংক থেকে যাদের বাসা দূরে, রাস্তার ঝক্কি-ঝামেলা এখন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। ভেঙে ভেঙে যেতে হয় অফিসে। অনেকে আবার পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন অফিসে।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যাংকাররা। শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যাংকারদের পরিবার।
কথা হয় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট নিয়াজ মাহবুব এর সঙ্গে। তিনি জানান, তার ছোট বোন একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। কিন্তু তাদের যাতায়াতের জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়নি। এজন্য তার বোনকে প্রতিদিনই রাস্তায় ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। তিনি বলেন, আমরা পুরোপুরি হোম কোয়ারেন্টিনে আছি। কিন্তু আমরা যৌথ পরিবারে থাকি, আমার বোন একটি প্রাইভেট ব্যাংকে জব করে। বাসায় বসে আতঙ্কে থাকি। নিয়মিত অফিস করছেন, যানবাহনের ব্যাবস্থা না করে পুরো ব্যাংকার পরিবারকে বিপদের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
Read More News
কথা হয় বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আমির খানের সাথে। তিনি জানান, গত কয়েকদিন আগে বাসা থেকে বের হই অফিসের উদ্দেশ্যে। মাঝপথে গিয়ে যানবাহন না পেয়ে ফিরে যেতে হয় বাসায়। পরের দিন কষ্ট করে হেঁটেই অফিসে যাই। অফিসে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বসের গালমন্দ শুনতে হয়। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণকে আর্থিক সুবিধা দেয়ার জন্য অফিসের উদ্দেশ্যে বাইরে বের হই। নতুন করে এলাকা লকডাউন করা হচ্ছে। তারপরও অফিস যাওয়া বাধ্যতামূলক। এখন চিন্তার বিষয় অফিস করবো না চাকরি ছাড়বো।
করোনা পরিস্থিতিতে ব্যাংক কর্মীদের নিরাপত্তায় ১১ দফা দাবি জানিয়েছে স্বাধীনতা ব্যাংকার্স পরিষদ সোনালী ব্যাংক লিমিটেড। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে পরিপালনে সহায়তা দানে খোলা রাখা ব্যাংক শাখাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত করা। শুধু নগদ টাকা উত্তোলন, জমা ও বৈদেশিক রেমিট্যান্সের মধ্যেই ব্যাংকিং সেবা সীমিত রাখা। এটিএম কার্ডধারী গ্রাহকদের চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সুযোগ বন্ধ করে অনলাইনমুখী সেবার প্রতি উৎসাহিত করা। ব্যাংকারদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা। ব্যাংকারদের ঝুঁকিভাতা দেয়ার মতো ১১টি দাবি জানিয়েছে এ সংগঠন।