ঢাকাই চলচ্চিত্রের সর্বকালের জনপ্রিয় নায়কদের অন্যতম সালমান শাহ। মৃত্যুর এতো বছর পরেও তাকে নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই ভক্তদের। অবশেষে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় ধানমণ্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেন পিবিআইয়ের মহাপরিচালক ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।
Read More News
স্ত্রী সামিরা এবং চিত্রনায়িকা শাবনূর দুইজনকেই প্রচণ্ড ভালোবাসতেন প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ। এ কারণে শাবনূরকেও বিয়ে করে সংসার করতে চেয়েছিলেন সালমান। কিন্তু সামিরা তাতে রাজি হননি। এমন সব তথ্য উঠে এসেছে পুলিল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআইর) তদন্ত প্রতিবেদনে।
মনোজ কুমার মজুমদার বলেন, পিবিআইয়ের তদন্তে সালমান শাহকে হত্যার অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক কলহ ও মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
দীর্ঘ তদন্তের বিষয়ে পিবিআইপ্রধান বলেন, ২০১৬ সালে পিবিআই তদন্ত শুরু করে। মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জবানবন্দি গ্রহণ করতে বেশি সময় লেগেছে। ১৬৪ ধারায় ১০ জনের জবানবন্দি নিয়েছে পিবিআই। সালমানের তৎকালীন স্ত্রী সামিরাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে আরও কয়েকজনের সাক্ষ্য। নতুন করে আলামত হিসেবে একটি ফ্যান জব্দ করা হয়েছে। ধারণা করা হয়, ওই ফ্যানে ঝুলেই আত্মহত্যা করেছিলেন সালমান।
১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবি দিয়ে দেশীয় চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে সালমান শাহর। স্মার্টনেস-গ্লামার ও পারসোনালিটির কারণে রাতারাতি তরুণ প্রজন্মের আইকনে পরিণত হয়ে ওঠেন এ নায়ক। মাত্র সাড়ে তিন বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি ছবি করেন। যার অধিকাংশই সুপারহিট। মৌসুমীর সঙ্গে জুটি বেঁধে চলচ্চিত্র অঙ্গনে পা রাখলেও সালমানের বেশিরভাগ ছবির নায়িকা শাবনূর। এই জুটি তখন এমন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে, যে কোনো ছবি মুক্তি পেলেই দর্শক প্রেক্ষাগৃহে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। একপর্যায়ে শাবনূরের সঙ্গে বিবাহিত সালমানের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। এর পর কলহ দেখা দেয় সালমানের পরিবারে।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমানের মৃত্যু হয়। সেই থেকে তার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। হত্যা নাকি আত্মহত্যা? অবশেষে পিবিআই জানাল, আত্মহত্যা করেছিলেন সালমান।