রাজাকারের তালিকায় ‘মুক্তিযোদ্ধার’ নাম

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে রাজাকারের বরিশাল জেলার তালিকায় ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া তার বাবা অ্যাডভোকেট সুধীর কুমার চক্রবর্তীর স্ত্রী ভাতাপ্রাপ্ত উষারানী চক্রবর্তীর নামও এ তালিকার ৪৫ নম্বরে রয়েছে।

প্রথমধাপে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার ও তার মা উষা রানী দেবীর নাম প্রকাশের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাসদ নেত্রী ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী।
Read More News

মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেল করেন তপন কুমারের মেয়ে ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী। সংবাদ সম্মলনে তিনি বলেন, ‘বরিশালে আমার বাবা একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। এছাড়া আমার দাদু মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী যার ক্রমিক নম্বর ১১২, পৃষ্ঠা নম্বর ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পেয়ে থাকেন। শহীদ বিধবা যিনি, সারাজীবন এ শোক বয়ে বেড়িয়েছেন। রাষ্ট্র তাকে স্বীকৃতি দিলো রাজাকারের তালিকায় তার নামটি অন্তর্ভুক্ত করে। এটি মুক্তিযুদ্ধে চেতনায় বিশ্বাসী সবার জন্য ন্যাকারজনক ঘটনা।’

তিনি বলেন, এ রকম একটি তালিকায় বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আসাকে উদ্দশ্যেমূলক বলে মনে করি।

আগেও বিষয়টি উল্লেখ করে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী।

বাবার নাম রাজাকারের তালিকায় দেখতে পাওয়াকে নিজের ‘রাজনীতির খেসারত’ উল্লেখ করে এ মুক্তিযোদ্ধাকন্যা লেখেন, ‘মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার পুরস্কার পেলাম আজ। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকে। সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের গেজেটে আমার বাবা এবং ঠাকুমার নাম প্রকাশিত হয়েছে।’

ডা. মনীষা বলেন, আমার ঠাকুরদা এড সুধির কুমার চক্রবর্ত্তীকে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত। তার সহধর্মিণী আমার ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্ত্তীকে রাজাকারের তালিকায় ৪৫ নাম্বারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা, ইতিহাস বিশেষজ্ঞ ও মুক্তিযোদ্ধা নেতা এনায়েত হোসেন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকারের তালিকায় দেখানোর মতো লজ্জাকর ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এটা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা যে তালিকা দিয়েছি তাতে মুক্তিযোদ্ধা ভাতাপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী ও তার মা উষারানীর নাম নেই। শুধু তপন চক্রবর্তী নয়, তার বাবা অ্যাডভোকেট সুধির কুমার চক্রবর্তীও একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। তাদের নাম রাজাকার তালিকায় দেখে আমরা হতবাক হয়েছি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *