প্রেসিডেন্ট আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশে কোনো ভিভিআইপি নেই বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে তিন ঘণ্টা দেরিতে ফেরি ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাসের মৃত্যুর ঘটনায় করা রিটের শুনানিতে বুধবার এ মন্তব্য করেন আদালত।
সংশ্লিষ্ট যুগ্ম সচিব ও ফেরির ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে আদালত বলেন, প্রেসিডেন্ট আর প্রধানমন্ত্রী ছাড়া দেশে কোনো ভিআইপি নেই। বাকিরা সবাই প্রজাতন্ত্রের চাকর। তাহলে তারা ভিআইপি দাবি করে কীভাবে।
আদালত আরও বলেন, ‘অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়িকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলাচল করতে দিতে হবে। এ ধরনের দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়ে আগামীতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
Read More News
শুনানি শেষে ফেরি ছাড়তে দেরি হওয়ায় মস্তিস্কে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ জনিত কারণে তিতাসের মৃত্যুর ঘটনায় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয়, এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন সচিবের বরাবর এ নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
এইসঙ্গে, সেই তদন্ত প্রতিবেদন আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে ২৮ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
রুলে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন।
এর আগে, মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর ফেরিঘাটে যুগ্ম সচিবের অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি না ছাড়ায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুতে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার রিট করেন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটসের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুর মণ্ডলের গাড়ির অপেক্ষায় প্রায় তিন ঘণ্টা ফেরি বসে থাকায় ঘাটে আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার চার দিন পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিতাসের মৃত্যু নিয়ে সংবাদ প্রকাশ ও প্রচারিত হয়। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।