‘ছেলেধরা’ গুজবে আতঙ্কিত বরিশাল

বরিশাল বিভাগে ছড়িয়ে পড়েছে ‘ছেলেধরা’ আতঙ্ক। এই আতঙ্কে অনেক অভিভাবক নিরাপত্তার শঙ্কায় শিশু সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ নিরাপত্তা বাড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিয়ে আসছেন। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত কোনো ‘ছেলে ধরা’র সাথে কোনো ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েনি।
Read More News

পুলিশ বলছে, যাদেরকে ছেলে ধরা সন্দেহে তুলে দেওয়া হয় পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে দেখা যায় তারা কেউ মানসিক রোগী বা কেউ ভিখারী।

পুলিশের দাবি বরিশালের কোথাও ছেলেধরার অস্তিত্ব নেই। কিন্তু বিষয়টিকে নিয়ে যেভাবে গুজব ছড়ানো হয়েছে তাতে শিশুদের অভিভাবকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করায় অভিভাবকেরা বেশিমাত্রায় আতঙ্কিত।

গত ১ সপ্তাহ ধরে বরিশাল জুড়ে ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবের ধরণটা অনেকটা এমন অমুক জায়গা থেকে এক ছেলেকে ছেলেধরা নিয়ে গেছে। তবে নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারেনা। এছাড়া মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়েও একে অপরকে সতর্ক করছেন ফলে ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে পড়ে আরও বেশি।

একটি মেসেজে দেখা যায়, পদ্মাসেতুর জন্য মানুষের মাথার প্রয়োজন হচ্ছে, তাই ছোট ছোট বাচ্চাদের ধরে নিয়ে মাথা কেটে সেতুতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে মাথার ছবি এডিট করা এবং অন্য জায়গার ছবিকে বরিশালের বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর এ বিষয়ে যাচাই-বাছাই না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়ালে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এক কর্মকর্তা বলেন, ছেলেধরা খবরটি একটি নিছক গুজব। বরিশালের কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে তার কোন সত্যতা নেই। বরিশাল নগরীর রুপাতলী ও গির্জামহল্লা এলাকার ঘটনা দুটির বিষয়ে তিনি বলেন, রুপাতলীতে যে লোকটিকে ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয়রা আটক করেছিলেন সে লোকটি ছিলো মানসিক প্রতিবন্ধী। আর গির্জা মহল্লা থেকে বাচ্চাসহ যে মহিলাটিকে আটক করা হয়েছিলো, সে বাচ্চাটা ছিলো ওই মহিলার বোনের মেয়ে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. ছালেহ্ উদ্দিন বলেন, ছেলেধরা খবরটি নিছক গুজব। এমন গুজব ছাড়ানোর কোনো মানেই খুঁজে পাচ্ছিনা। তারপরেও পুলিশ প্রশাসন বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখছে। প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টির সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ গুজব ছড়ানোর নেপথ্যে কারা তাদের খুঁজে বের করতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *