শিশুকে নদীতে ফেলে দিলো সৎমা

কালো বোরকা পরা এক মহিলা কোলে ৫ বছরের এক কন্যা শিশু। সুরমা নদীর ওপর কুমারগাঁও ব্রিজের ওপর বিকাল ৩টা হঠাৎ করে মহিলা কোলে থাকা শিশুটিকে মারধর করে। এতে নজর কাড়ে সবার। তাদের সামনেই কোলের শিশুটিকে নদীতে ফেলে দেয় মহিলাটি ।
Read More News

হায় হায় করে উঠেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। উপস্থিত থাকা লোকজনের কেউ কেউ দৌড়ে গিয়ে নদীতে নামেন। উজানের ঢলের তোড়ে হারিয়ে যায় শিশুটি। স্থানীয়রা খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটিকে পাননি। খবর দেয়া হয় ডুবুরিকে। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা গিয়ে শিশুটির খোঁজে তল্লাশি চালায়। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তল্লাশি করা হয়। কিন্তু শিশুটিকে পাওয়া যায়নি।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সিলেটের কুমারগাঁওয়ে। ঘটনার পর স্থানীয় জনতা আটক করে ওই মহিলাকে পুলিশে দিয়েছে। এমন ঘটনায় হতবাক কুমারগাঁওবাসী। মা তার কোলের শিশুকে এভাবে নদীতে ছুড়ে ফেলার ঘটনাও বিরল। আটক মহিলার নাম সালমা বেগম। বয়স ৩৩ বছর। তার বাড়ি সিলেটের জালালাবাদ থানার ফতেহপুর গ্রামে। স্বামী স্থানীয় কৃষক জিয়াউল হক। শিশুটির নাম মাহা বেগম। বয়স ৫ বছর। সালমা বেগমের সৎ-সন্তান সে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে- বিকাল ৩টার দিকে বোরকা পরিহিত সালমা বেগম কোলে শিশুটিকে নিয়ে ব্রিজের ওপর আসেন। তিনি ব্রিজের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে হেঁটে আসেন। এ সময় কোলে থাকা শিশুটি কান্না করছিল। হঠাৎ সালমা বেগম তার কোলে থাকা শিশুটিকে নিচে ফেলে দেন।

ফতেহপুর গ্রামের জিয়াউল হক এক দরিদ্র কৃষক। অভাব-অনটনের সংসার তার। জিয়াউল হক আগে এক বিয়ে করেছিল। তিন বছর আগে তাদের ডিভোর্স হয়। ওই স্ত্রীর ঔরসজাত দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আর সালমা বেগমের গর্ভে দুই বছরের আরো একটি মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে জিয়াউল হক পুত্র সন্তান চাইছিলেন।

অভাব-অনটনের সংসার হওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় জিয়াউল ও সালমার মধ্যে বিরোধ বাঁধে। এই বিরোধের জের ধরে জিয়াউল হক প্রায় সময় দ্বিতীয় স্ত্রী সালমাকে মারধর করে। গতকাল দুপুরেও জিয়াউল ও সালমার মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ সময় জিয়াউল স্ত্রী সালমাকে মারধরও করে। এক পর্যায়ে সৎ মেয়ে মাহাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় সালমা। আর ব্রিজের ওপর এসে মাহাকে নদীতে ফেলে দেয়।

শিশুটিকে পাওয়া গেলে জালালাবাদ থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *