ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ১৩ মিনিটের মধ্যে পরপর দু’টো কালবৈশাখী ঝড়ে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি ও বাঁকুড়ায় এসব প্রাণহানীর খবর পাওয়া গেছে।
প্রথম কালবৈশাখী ঝড়টি ওঠে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৭টা ৪২ মিনিটে। এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৪ কিলোমিটার। আর দ্বিতীয়টির ছিল ঘণ্টায় ৯৮ কিলোমিটার। সেটি শুরু হয় ৭টা ৫৫-তে।
দ্বিতীয় ঝড়টির সর্বোচ্চ গতিবেগ স্থায়ী হয়েছিল মাত্র এক মিনিট। ২০০৯ সালে আইলার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১৩ থেকে ১২০ কিলোমিটার। ফলে দ্বিতীয় কালবৈশাখী আরও কিছুক্ষণ থাকলে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারত।
Read More News
কলকাতা এবং সল্টলেকের বিভিন্ন রাজপথে অন্তত দেড়শ’ গাছ ও গাছের ডাল ঝড়ে ভেঙে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। বেহালা পর্ণশ্রীর ডায়মন্ড হারবার রোডে গায়ে গাছ পড়ে মারা গেছেন নিরুষ মিঞ্জ (৬৫)। লেনিন সরণীতে অটোরিক্মার ওপর গাছ পড়ে মারা যান অটোচালক মানোয়ার আলম (৫১) ও যাত্রী আমরিন জাভেদ (২৭)।
অন্যদিকে আনন্দপুরের পশ্চিম চৌবাগায় বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয় মোহাম্মদ শাহিদের (৪০)। কলাকার স্ট্রিটে বহুতল ভবনের দেয়ালের একাংশ মাথায় ধসে পড়লে মারা যান অনীত শুক্ল (২৮)।
হাওড়ায় শুধু বেলুড়েই ঝড় কেড়ে নিয়েছে চার জনের প্রাণ। আনন্দবাজার জানিয়েছে, গিরিশ ঘোষ রোডে গাছ পড়ে মারা যান দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী খুশি মারিয়া (১৬)। গাছ ভেঙে ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে তারাচাঁদ গাঙ্গুলি স্ট্রিটে ৪৫ বছরের এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়। ওই সাইকেলে থাকা এক তরুণী আর এক শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।কলকাতা-কালবৈশাখী ঝড়-পশ্চিমবঙ্গ
বেলুড়ের গাঙ্গুলি স্ট্রিটেও বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আন্দুল রোডে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জয়দেব দাস (২২) নামে এক বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়। ডুমুরজলায় গাছ পড়ে মৃত্যু হয় মুনমুন দাসের (২৩)। বজ্রাঘাতে বাঁকুড়ার ইন্দাসের তেঁতুলমুড়িতে সুকুমার ঘোষ (৩৪) এবং হুগলির হরিপালে তুলি মুখোপাধ্যায় (১৭) মারা যান।
প্রচন্ড ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে মঙ্গলবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে প্রায় এক ঘণ্টা ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকে। ঝড়ের কবলে পড়ে গাছ উপড়ে বিভিন্ন স্থানে কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ হয়ে যায় রেল যোগাযোগ। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ ও টেলিফোন লাইন বিকল হয়ে পড়ে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।