প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ কয় দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস বন্ধ। পরীক্ষা বন্ধ হলো। রাস্তায় যানজট। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। মানুষ কষ্টে থাকবে কেন। কোটা পদ্ধতি থাকারই দরকার নেই। আমি কেবিনেট সেক্রেটারিকে বলেই দিয়েছি, সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নিতে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরো জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনা ন্যক্কারজনক।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখ পেলাম কোটা সংস্কার নিয়ে করা আন্দোলনে। আন্দোলন কী ? লেখাপড়া বন্ধ করে রাস্তায় বসে থাকা? হাসপাতালে যেতে পারছে না মানুষ।
শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরাই করেছি। কিন্তু এখন গুজব ছড়ানো হচ্ছে এসব দিয়ে।
ছাত্র নিহত হয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিথ্যা গুজব ছড়ানোর স্ট্যাটাস কে দিল? অঘটন ঘটলে দায়িত্ব কে নিত?’
Read More News
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কখনোই ভিসির বাড়িতে গিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বা ছাত্রীরা আক্রমণ করতে পারে, ভাঙচুর করতে পারে, আর সে ভাঙচুরটা কী, ভিসির বাড়ির ওই ছবি দেখে আমার মনে পড়ছিল ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের ৩২ নম্বর বাড়ি যেমন ভাঙচুর করেছিল, ঠিক একই কায়দায়। এমনকি সব লকার খুলে গহনাগাটি চুরি করা, টাকা পয়সা চুরি করা থেকে শুরু করে বাথরুমের কমড খুলে রাখা, সব কিছু ভেঙে চুরমার করে দেওয়া। ভিসি ছিলেন, তাঁর ছেলে মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ছিল ভয়ে। ভিসি সামনে এসেছিলেন তাঁর ওপর আঘাত পর্যন্ত করতে গেছে। যদিও অন্য ছেলেরা তাঁকে বাঁচিয়েছে। তাঁর ছেলেমেয়েদের ভয়ে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। একতলা, দোতলা সব তছনছ করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার রেকর্ডের বক্স পর্যন্ত সরিয়ে নিয়ে গেছে। কত পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে এ ঘটনা। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ার উপযুক্ত না। তারা ওখানকার ছাত্র বলে আমি মনে করি না। কারণ কোনো শিক্ষার্থী তাঁর শিক্ষককে এভাবে অপমান করতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি মনে করি এ রকম আন্দোলন বার বার হবে। বারবার শিক্ষার সময় নষ্ট হবে। এই যে পরীক্ষা নষ্ট হলো। যেখানে আজ পর্যন্ত একটা সেশন জট ছিল না। অল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা দিয়ে পাস করে তারা চাকরি পেত।
অথচ কয়েকদিন ধরে সব ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস বন্ধ। তারপর আবার ভিসির বাড়ি আক্রমণ। রাস্তাঘাটে যানজট। সাধারণ মানুষের কষ্ট। সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? বারবার কষ্ট বন্ধ করার জন্য এবং বারবার এ আন্দোলন ঝামেলা মেটানোর জন্য কোটা পদ্ধতিই বাতিল। পরিষ্কার কথা। আমি এটাই মনে করি, এটা হলেই ভালো হবে।