দুই শিশু শিহাব ও টিটোনকে সংবর্ধনা দিয়েছে পাকশী রেলওয়ে বিভাগ। ঈশ্বরদীর পাকশীতে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গত সোমবার লাল মাফলার দেখিয়ে ট্রেন থামিয়ে দেয় ওই দুই শিশু। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি।
এরই প্রেক্ষিতে আজ বুধবার শিহাব ও টিটোনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) ওই সংবর্ধনার আয়োজন করেন।
Read More News
শিহাবের বয়স ৬ আর টিটোনের বয়স ৭। উভয়েই রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ঝিনা গ্রামের বাসিন্দা। ওরা ঝিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে। শিহাব পড়ে প্রথম শ্রেণিতে আর টিটোন দ্বিতীয় শ্রেণিতে।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আড়ানি থেকে ট্রেনে চেপে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এসে নামে শিহাব ও টিটোন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আড়ানী স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাদের মা ও বাবা। দুই শিশুকে দেখতে এ সময় স্টেশনে প্রচুর মানুষ ভিড় করে।
সেখান থেকে শিহাব ও টিটোনকে ডিআরএমের গাড়িতে করে পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ের সামনে আনা হয়। এখানেও প্রচুর মানুষ তাদের দেখার জন্য ভিড় করে। পাকশী ডিআরএম কার্যালয়ের সামনে আয়োজন করা হয় সংবর্ধনার। সংবর্ধনার শুরুতে ডিআরএম অসীম কুমার তালুকদার দুই শিশুকে ফুলের মালা ও ফুলের তোড়া উপহার দেন। এরপর পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় কর্মকর্তারাও ফুল দিয়ে শিশু ও তাদের পরিবারকে অভ্যর্থনা জানান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হবিবুল ইসলাম হব্বুল ও ঠিকাদার আনোয়ারুল ইসলাম দুই শিশুকে দুই হাজার করে চার হাজার টাকা, মীর আখতার হোসেন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই শিশুকে নগদ পাঁচ হাজার টাকা এবং পাকশী রেলের পক্ষ থেকে দুই শিশুর প্রত্যেককে ১৩ হাজার করে মোট ২৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
গত সোমবার সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী স্টেশনের অদূরে ঝিনা রেলগেট এলাকায় রেললাইন দিয়ে একটি ট্রেন চলে যাওয়ার পর বিকট শব্দ হয়। এ শব্দ শুনে লাইনের কাছে এগিয়ে যায় দুই শিশু। দেখতে পায় ট্রেন চলে যাওয়ার পরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাইন। এমন সময় লাইন দিয়ে একটি তেলবাহী ট্রেন আসতে দেখে তারা গলায় থাকা লাল মাফলার তুলে ধরে ওড়াতে থাকে। তাদের সংকেত পেয়ে ট্রেন থামান চালক। এতে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ইঞ্জিন ও তেলবাহী ৩০টি বগি।