স্বামী-স্ত্রীর সেক্স নিয়ে খোলাখুলি কথা বলা প্রয়োজন

সেক্স শব্দটি যেন উচ্চারণ করতেও লজ্জা পান বেশিরভাগ মানুষ। বিষয়টি নিয়ে আবার আগ্রহেরও শেষ নেই। কিন্তু লজ্জার কারণে আলোচনা করা হয় না। বিশেষ করে নারীরা তো অত্যন্ত গোপন বিষয় হিসেবে এই ব্যাপারে মুখই খুলতে চান না। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় জরায়ু কিংবা ব্রেস্ট টিউমারের মতো ব্যাধির কথাও মুখ ফুটে বলেন না অনেক নারী। লজ্জা কাটিয়ে প্রজনন এবং যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে রাজি নন তারা।

স্কুল পর্যায়ে বইয়ে পিরিয়ড কিংবা যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে পাঠ্য থাকলেও সেই অধ্যায়টি সঙ্গোপনে এড়িয়ে যান অনেক  শিক্ষক। অথচ উন্নত দেশগুলোতে খুব স্বাভাবিক ভাবেই পড়ানো হয় এসব বিষয়।

বাংলাদেশের মতো অনেক জায়গাতেই এমনকি স্বামী-স্ত্রী বহু বছর একসঙ্গে সংসার করার পরও নিজেদের যৌন স্বাস্থ্য কিংবা চাহিদা নিয়ে কথা বলতে সংকোচ বোধ করেন। সেক্স নিয়ে কথা না বলার কারণে সৃষ্টি হয় দাম্পত্য অশান্তি, শারীরিক অতৃপ্তি, ধর্ষণ, নিপীড়ন, অনিয়ন্ত্রিত যৌন জীবন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের মতো ঘটনা। তাই কিছু কিছু সম্পর্কে সেক্স নিয়ে খোলাখুলি কথা বলাটা খুবই প্রয়োজন।
Read More News

হাজব্যান্ড-ওয়াইফ
স্বামী-স্ত্রীর একান্ত গোপন মুহূর্তগুলো সম্পর্কে কথা বলতে অনেকেই পছন্দ করেন না। বাইরের কারও সঙ্গে এই বিষয়ে কথা না বললেও স্বামী-স্ত্রীর নিজেদের মধ্যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা জরুরী। নিজেদের সম্পর্কটাকে আরও সহজ এবং উপভোগ্য করে তোলার জন্য সেক্স নিয়ে দুজনে আলাপ করার বিকল্প নেই। কী ধরণের যৌনতা পছন্দ করেন, কী অপছন্দ করেন, নিজেদের ফ্যান্টাসি, জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ইত্যাদি আরও নানা বিষয়ে সঙ্গীর সঙ্গে আলাপ করা উচিত। এতে যৌনতা অনেক স্বাচ্ছন্দ্যময় ও উপভোগ্য হয়ে ওঠে। সুস্থ যৌন সম্পর্কের জন্য সেক্স নিয়ে কথা বলা জরুরী। এতে একে অপরের আবেগ-অনুভূতি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া সম্ভব।

প্রেমিক-প্রেমিকা ও বন্ধুত্ব
প্রেমের সম্পর্কের সঙ্গে যৌনতাও জড়িয়ে আছে। তবে, অনেক মেয়ে না না চাইলেও প্রেমিকের মন রক্ষায় শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি ডেট-রেপ এবং ধর্ষণের ভিডিও ধারণের মতো ঘটনাও ঘটছে প্রেমের ফাঁদে ফেঁসে। তাই প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে সেক্স নিয়ে অবশ্যই খোলাখুলি কথা বলে নেয়া উচিত। দুজনের পছন্দ-অপছন্দ জানা থাকলে আবেগের বশবর্তী হয়ে বিপদে পড়ার আশঙ্কা কমবে।

বয়ঃসন্ধি
বয়ঃসন্ধিতে নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। অনেক সময়ই এগুলো মুখ ফুটে বলা হয় না। বিশেষ করে সেক্স বিষয়ক অনেক প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খায়। এছাড়াও যৌন হয়রানির স্বীকার হলেও বলতে পারে না কাউকে। সঠিক তথ্য জানার জন্য কোনো বিশ্বস্ত সূত্র খুঁজে বেড়ায় কৌতূহলী মন। আর এসব কৌতূহলের কারণেই তারা জড়িয়ে পরে পর্নোগ্রাফির মতো নেশায়। তাই বয়ঃসন্ধিতে অভিভাবকেরই উচিত সন্তানকে সেক্স সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়া।

সন্তানের সঙ্গে বয়ঃসন্ধিতে যে বিষয়গুলো নিয়ে অবশ্যই কথা বলতে হবে সেগুলো হলো, শারীরিক পরিবর্তন, বয়ঃসন্ধিকালের আচরণ, প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা, যৌন হয়রানি ইত্যাদি। এছাড়াও সন্তানের মনে যে কোন প্রশ্ন থাকলে সেগুলো এড়িয়ে না গিয়ে বরং স্বাগত জানাতে হবে, খোলামেলা কথা বলতে হবে।

মনোবিদরা বলেন, সঠিক ধারণা না থাকার কারণে এবং সেক্স নিয়ে কথা না বলার কারণে সেক্সুয়াল সমস্যা এবং সেক্সুয়াল ডিজিজ এর পার্থক্য বুঝতে পারেন না বেশিরভাগ মানুষ। সেক্সুয়াল লাইফের অতৃপ্তির কারণে ডিভোর্সের হারও বেড়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *