দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে দোষী ভারতের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিংকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন হরিয়ানা রাজ্যের রোহতাক কারাগারের অস্থায়ী আদালত।
স্থানীয় সময় আজ সোমবার দুপুরে এ রায় দেন ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইর বিশেষ আদালতের বিচারপতি জগদীপ সিং।
এর আগে বিচারপতি ও তাঁর দুই সহকারীর নিরাপত্তার জন্য হরিয়ানা সরকারকে নির্দেশ দেন পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের হাইকোর্ট। জেল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলের মধ্যে বিচারপতি ও দুই পক্ষের আইনজীবীরা যাতে আদালতের মতো সুযোগ-সুবিধা পান, তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়।
এদিকে আজ রায় ঘোষণার সময় রোহতাকে লক্ষাধিক রাম রহিম ভক্ত জড়ো হয়। রোহতাকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শনিবার রাত থেকেই শহরটিতে ১০ কোম্পানি আধাসেনা মোতায়েন করা হয়।
Read More News
রায়ের আগেই রোহতাক জেলায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ রোহতাকে ঢুকলে আটক করা হবে বলে জানানো হয়। এ ছাড়া জেলার সব গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাতে কড়া নজরদারির নির্দেশ দেয় প্রশাসন।
২০০২ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ি এবং পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের প্রধান বিচারপতিদ্বয়ের কাছে বেনামি চিঠিটি লেখেন হরিয়ানার সিরসা শহরের ‘গুরু’রাম রহিমের ডেরার (আস্তানা) এক নারী। সেখানে আনা হয় রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকির অভিযোগ। তুলে ধরা হয় ডেরার ভেতরে বিভিন্ন অনাচারের কথা।
বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পার হওয়ার পর শুক্রবার দেওয়া রায়ে প্রমাণিত হয় সেই চিঠিতে লেখা অনেক অভিযোগ। ভারতের বিশেষ আদালত রাম রহিম সিংকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ৩৭৬ (ধর্ষণ) ও ৫০৬ (সন্ত্রাসী হুমকি) ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ধারাবলে তাঁর সর্বনিম্ন সাত ও সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হওয়ার কথা ছিল।
এদিকে শুক্রবার রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার পর থেকে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতায় নিহত হয় কমপক্ষে ৩৮ জন। আহত হন ২০০ জনের বেশি মানুষ।