ধর্ষণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া বিতর্কিত ভারতীয় ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং-এর ধর্ম ব্যবসার সঙ্গে রয়েছে হাজারো অজানা ব্যবসা। এই সবের মধ্যে রয়েছে হাসপাতাল থেকে পেট্রোল পাম্প, শিক্ষা নিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবসা।
এর জন্য ফাইনঅ্যাপ নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম-ও বানিয়েছে সে। হরিয়ানার বুকে ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক বিলাস বহুল বাড়ি।
হিসেব বলছে পাঁচ থেকে ছয় কোটি ভক্ত রয়েছে ডেরা সাচা সোদার প্রধান বাবা রাম রহিমের। পঞ্জাব, হরিয়ানা সহ দেশ-বিদেশজুড়ে রয়েছে ৪৬টি আশ্রম। ইংল্যান্ড, আমেরিকা থেকে কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, অস্ট্রেলিয়া-তেও রয়েছে বাবা রাম রহিমের আশ্রম। এই সব আশ্রমে শুধু ভারতীয়রাই নন, বিদেশিদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো।
রাজস্থানে রয়েছে বাবা রাম রহিমের হাসপাতাল-এর ব্যবসা। অর্থের বলের সঙ্গে সঙ্গে বাবা রাম রহিম তার জীবনযাত্রাকেও নিয়ে গিয়েছে রাজ মর্যদায়।
বলতে গেলে কোনও ধনবান রাজার থেকে কম কিছু আকর্ষণীয় নয় তার এবং তার পরিবারের জীবনযাত্রা। তার এবং তার স্ত্রী-সন্তানদের নামে যেমন রয়েছে বিলাস-বহুল সব বাড়ি তেমনি রয়েছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের সব গাড়ি। এই মহামূল্যবান গাড়ির তালিকায় রয়েছে হামার, বুগাত্তি ভেইরন, বিএমডবলু সহ একাধিক নামি ব্র্যান্ড। বুগাত্তি ভেইরনের একটি গাড়িকে তো আবার রথের মতো করে সাজিয়েছে বাবা রাম রহিম। ‘চ্যারিয়ট অফ গড’ বলে এই গাড়িকে ডাকে বাবা রাম রহিমের ভক্তরা। এছাড়াও রয়েছে একটি অ্যাগরোজেটার। আসলে হিরো হন্ডা কারিজমাকে নিজের মতো করে অ্যাগরোজেটার বানিয়েছে ডেরা সাচা সোদার প্রধান। এমনকী, হুন্ডাই স্যান্ট্রো এবং মারুতি জিপসি দিয়েও এমন আরও দু’টি অ্যাগরোজেটার বানিয়েছে বাবা রাম রহিম। সিরষায় ডেরা সাচা সোদার সদর দফতর। সেখানে গুরপ্রিত রাম রহিম সিং-এর ৭০০ একর কৃষি জমি আছে। সিনেমা জগতেও নাম লিখিয়েছে সে। নিজেই ছবি প্রযোজনা করে। নিজেই আবার সেই সিনেমার পরিচালক। এমনকী ডিওপি-র কাজও সে নিজে সামলায়। সিনেমার নায়কও সে বাবা রাম রহিম নিজে। এখনও পর্যন্ত ৫টি ছবি বানিয়েছে সে। এবং তার দাবি সব ছবিই ১০০ কোটি টাকার উপরে ব্যবসা করেছে। নায়ক হিসাবে সে ২.৬ কোটি টাকা নেয় বলেও একটা সময় দাবি করেছিল বাবা রাম রহিম।
গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও নাম রয়েছে বাবা রাম রহিমের। এই রেকর্ডের মূল্যও নাকি ২০ কোটি টাকা। ২০১৫ সালে এক সংবাদমাধ্যমের করা সমীক্ষায় বাবা রাম রহিম দেশের শক্তিশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৬ তম স্থান পেয়েছিল। শুক্রবার পর্যন্ত বাবা রহিম জেড প্লাস নিরাপত্তা পেত সরকারের কাছ থেকে। দেশের মাত্র ৩৬ জন ব্যক্তি এই জাতীয় নিরাপত্তা ভোগ করে। যদিও, ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বাবা রাম রহিমকে সেই জেড প্লাস নিরাপত্তা আর দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে সরকার।