ফাল্গুনের দিনে সবুজের সমারোহ নিয়ে বসন্ত আসছে শীতকে বিদায় জানাতে। দূর থেকে ভেসে আসে ফুলের সুঘ্রান আর কোকিলের কুহু কুহু সমধুর ডাক। বসন্তের প্রথম দিনে এগুলোর দেখা না মিললেও পয়লা ফাল্গুন তো আমাদের কাছে উৎসবেরই দিন। এ বসন্ত উৎসব শুধু নাচ-গানের অনুষ্ঠান নয়, বাঙালি সংস্কৃতিকে চেনা-জানা ও নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়ার উৎসব।
মানুষ প্রকৃতির সন্তান। প্রকৃতির মধ্যেই সে বেড়ে ওঠে। যে প্রকৃতির মাঝে সে বেড়ে ওঠে, সেই প্রকৃতি সে দেখবে না- তা তো হতেই পারে না। তাই কবিতায় ও সুরে প্রকৃতির প্রকাশ করে মানুষ। প্রকৃতি যেন বিভিন্ন অনুভূতির দ্বার উন্মোচন করে দেয়। প্রকৃতির দ্বারা সব সময়ই চিত্রে আলোড়িত হয়।
Read More News
বিভিন্ন ঋতুর বর্ণনা থাকলেও বসন্তকেই ‘ঋতুরাজ’ বলা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরই বসন্তকে সাধারণ মানুষের অনেক কাছে নিয়ে এসেছেন। প্রকৃতি চিরকালই ধরা দিয়েছে কবিদের কবিতায়। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে মনের পরিবর্তনের বিষয়গুলো খুব ছোট মনে হলেও এর বিশাল প্রভাব আছে। কর্মব্যস্ত জীবনের ফাঁকে এই ছোট খাটো উপলব্ধিগুলোই মনে এনে দেয় ভিন্ন মাত্রা।
প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়েই পাওয়া যায় নির্মল আনন্দ। আর এ আনন্দ যদি সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায়, তবে জীবনের সৌন্দর্য সবার চোখেই ধরা দেবে। বসন্তের প্রথম দিনে তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সের মানুষ সুন্দর করে সাজগুজু করে, যা দেখতে ভাল লাগে।
বসন্তকে বরণ করার প্রধান অনুষঙ্গ ফুল। পহেলা ফাল্গুনের দিন তরুণীরা চুলে খোপা বেঁধে কেউ বেনী করে ফুলের মালা, ফুল জড়িয়ে ঘুরতে বের হয়। পহেলা ফাল্গুন বা বসন্তের প্রথম দিনে বাঙালি নারীরা বাসন্তী বা হলুদ রঙের শাড়ি পরে ঢাকা শহরে বের হয়।
পয়লা ফাল্গুন উপলক্ষে শুধু শহরেই নয়, বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও হয় নানা আয়োজন। বিভিন্ন স্থানে মেলা বসে, ওরসের স্থানগুলোতে মিলাদ হয়। সর্বত্রই থাকে বাঙালিয়ানার ছাপ। সত্যি ফালগুনের প্রতি পরতে পরতে প্রকাশ পায় বাঙালিয়ানা ঐতিয্য।