ইসলামী বক্তা ও পিস টিভির পরিচালক জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তার বিভিন্ন বক্তৃতা ও ভিডিও তদন্ত করে এ কথা জানিয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্যের পুলিশ।
মুম্বাই নিবাসী জাকির নায়েক ওমরাহ পালনের উদ্দেশে্ সৌদি আরব গিয়েছিলেন। সেখান থেকে এখনও ভারতে ফেরেননি তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় ভারতে ফেরা মাত্র তাকে গ্রেফতার করার সম্ভাবনা নেই।
জানা যায়, জাকির নায়েকের বিভিন্ন বক্তৃতার শত শত ইউটিউব ভিডিও ও সিডি গত কয়েকদিন ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছে মহারাষ্ট্রের রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ।
Read More News
ওই বিভাগের পক্ষ থেকেই ভারতের ‘দ্যা হিন্দু’ পত্রিকা-কে জানানো হয়েছে নায়েকের কিছু বক্তৃতায় বড়জোর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিযোগ আনা যেতে পারে। কিন্তু ওইসব বক্তৃতার ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে এখনই মামলা করার কোনো সুযোগ নেই। তবে তারা নায়েকের গতিবিধি ও পদক্ষেপে নজর রাখছেন বলেও জানানো হয়েছে।
ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারী জঙ্গিদের কেউ কেউ ফেসবুকে জাকির নাইকে ফলো করতেন। ধারণা করা হচ্ছে তারা তার বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। এ কথা সামনে আসার পর থেকেই জাকির নায়েক এবং তার পিস টিভি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এরই জেরে সোমবার বাংলাদেশে পিসটিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
তবে এ নিয়ে বাংলাদেশের ইসলামী চিন্তাবিদ ও দলগুলোর মধ্যে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন মত ও ভাবনা। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, যে যুক্তি দেখিয়ে সরকার পিস টিভি বন্ধ করছে, সে একই যুক্তিতে ভারতের বাংলা চ্যানেল স্টার জলসা বন্ধ করে দেয়া উচিত।
দুটি বিষয়কে কিভাবে তিনি এক করে দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুটি বিষয়ই সমাজের জন্য একই রকম ক্ষতিকর এবং উদ্বেগজনক।
এদিকে দেশে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের লক্ষ্যে টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করা ভালো কোনো উপায় নয় বলে মত দিয়েছেন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ। তার মতে, নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে কোনো কিছুর মূল উৎপাটন সম্ভব নয়। তবে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে যদি সরকার এই উদ্যোগ নেয়, তাহলে সেটিকে সমর্থন করবেন তিনি।
মাওলানা মাসুদ বলেন, পিস টিভিতে জাকির নায়েক ইসলামের ব্যাখ্যা দেন সালাফি ব্যাখ্যা অনুসারে। ইসলামে সালাফি ব্যাখ্যার ধরণ কিছুটা উগ্র, এবং আইএসের শীর্ষ নেতা আবু বকর আল-বাগদাদী এবং আলকায়েদার ওসামা বিন লাদেন উভয়েই সালাফি মতাদর্শে দীক্ষিত ছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
ফলে এই দুই এর সাদৃশ্যের কারণে অনেকেই সন্দেহ করে বিশেষ ওই চ্যানেলটির মাধ্যমে বিশেষ করে তরুণরা জিহাদে উৎসাহিত হতে পারে। সূত্র: বিবিসি ও দ্যা হিন্দু