যাকে নিয়ে সারা ফেসবুক তোলপাড়

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত দুই দিনের সবচেয়ে চর্চিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো হিরো আলম। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে আলমের ভিডিও ও ছবি।

কিন্তু কে এই হিরো আলম? আশরাফুল আলম থেকে হিরো আলম হয়ে ওঠা আলম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাচ্ছেন মাহতাব হোসেনসিডি বিক্রি করতেন আশরাফুল আলম। সেটা বেশ আগের ঘটনা। সিডি যখন চলছিল না তখনই মাথায় আসে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসার। ভাবলেন নিজ গ্রামেই সেটা করবেন, এবং করে ফেললেন। বগুড়ার এরুলিয়া ইউনিয়নের এরুলিয়া গ্রামেই শুরু হয় আলমের ডিশ ব্যবসা।

ছোটবেলা থেকেই অভাব-অনটনের সাথে চলা আলমের পরিবার তাকে আরেক পরিবারের হাতে তুলে দেয়। আলম চলে আসেন একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের বাসায়। আব্দুর রাজ্জাক তাকে ছেলের মতো করেই বড় করে তোলেন। স্নেহ করতেন। কিন্তু গ্রামে অভাব তো প্রায় মানুষের আছে। আলমের পালক পিতা আব্দুর রাজ্জাকের সংসারও অভাবের ছোঁয়া পায়। স্থানীয় স্কুলে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আলমকে নেমে পড়তে হলো জীবিকা নির্বাহের তাগিদে। সিডি বিক্রি থেকে আলম ডিশ ব্যবসায় হাত দিয়ে সফলতা অর্জন করেন। তার মাসে আয় ৭০-৮০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখেই আছেন আলম।
Read More News

কালের কণ্ঠকে আলম বলেন, ”আমি আমার গ্রামের সবার ভালোবাসা পেয়েছি। এই ভালোবাসা আমাকে নিজের হাতে করে খেয়ে বাঁচতে শিখিয়েছে। এখন আমার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আল্লাহর রহমতে সুখেই আছি।”

সিডির ব্যবসা করতেন আলম। ক্যাসেটে দেখতেন মডেলদের ছবি। সেই থেকে মাথায় ঢোকে মডেল হওয়ার। ২০০৮ সালেই করে ফেলেন একটা গানের সাথে মডেলিং। সেটাই ছিল শুরু। এরপরে সেসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে সংসারে মনোযোগী হন। ২০০৯ সালে বিয়ে করেন পাশের গ্রামের সুমী নামের এক তরুণীকে। আলম সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়লেও সুমী পড়েছেন এসএসসি পর্যন্ত। তাদের সংসারে আসে নতুন দুই অতিথি। নিজের নামের সাথে মিলিয়ে রাখেন সন্তানদের নাম। পুত্র আবির ও কন্যা আলো। এখন সংসার আর ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত আলম। পাশাপাশি নিজে কিছু মিউজিক ভিডিও করেন। সেগুলো নিজের ক্যাবল চ্যানেলেই প্রচার করেন। গ্রামের মানুষরাও তাকে বাহবা দেয়। আলম উৎসাহ পান।

আলম বলেন, আমার মডেল হওয়ার ইচ্ছে ছিল আগে। যখন সিডি বিক্রি করতাম। আমি জানি না এসব ইচ্ছে পূরণ হয় কি না, তবে লেগে ছিলাম। হয়েছে। অনেকে বলে বাজে হয়েছে আমি কান দেই না। অনেকে আবার বলে ভালোই হয়েছে। আমি গ্রামের ছেলে মন যা চায় করি। মানুষের কথায় কান দেওয়ার ইচ্ছে নেই।

বগুড়া সদরের এরুলিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক আলম সম্পর্কে কালের কণ্ঠকে বলেন, ”আলম ছেলে খারাপ না। কষ্ট করে বড় হয়েছে আলম। সে গান গাইতে পারে না, নাচতেও পারে না। তবে তার মডেলিং এর শখ আছে এটা জানি।”

এরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, ”আলম সম্পর্কে জানি সে ডিশ ব্যবসা করে। নির্বাচনও করে। দুইবার দাঁড়িয়েছিল। হেরে গেছে। তবে এলাকার মানুষজন তাকে পছন্দ করে। নির্বাচনে এবার সে দ্বিতীয় হয়েছে। ছেলে হিসেবে খারাপ না, তবে শুনছি মডেলিং-এর দিকে তার ঝোঁক।”

আশরাফুল আলম কালের কণ্ঠকে নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, ”আমি এবার মাত্র ৭০ ভোটে হেরেছি। এর আগেরবারও হেরেছি অল্প ভোটে। তবে এলাকার মানুষের ভালোবাসার জন্য আমি আরেকবার নির্বাচন করবো। আমি বলেছিলাম আর দাঁড়াবো না, কিন্তু ভালোবাসার জন্য পরেরবার আরেকবার দাঁড়াবো।”

মডেলিং সম্পর্কে আলম বলেন, ”আমার ভিডিওগুলো ফেসবুক, ইউটিউবে ছড়িয়ে যাওয়ায় এখন অনেকেই আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে দুটি মিউজিক ভিডিও করার জন্য রাজি হয়েছি। আজ রাতে ঢাকা যাচ্ছি।” কার সাথে, কিসের মিউজিক ভিডিও এমন প্রশ্নের জবাবে আলম জানান, ‘কুসুম কুসুম প্রেম’ ছবির সজলের সাথে কাজ করার কথা। ”সজল ভাই আমাদের বগুড়ার ছেলে।”

সবচেয়ে ভাইরাল হওয়া ভিডিও

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *