৪-২ ব্যবধানের জয় দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতে নিল চিলি।
প্রতিশ্রুতি দিয়েও পারলেন না লিওনেল মেসি। টানা তিনটি বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠার পরও না পাওয়ার আক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৮২ হাজার ২৬ জন দর্শকের মেসি মেসি চিৎকারও কোনো কাজে এলো না। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ফাইনালে মেসি তার চমক দেখাতে পারেননি। ট্র্যাজেডির নায়ক হয়ে রইলেন মেসি। মেসি কাঁদলেন, কাঁদালেন লক্ষ দর্শক ও ভক্তকে।
ইনজুরির কারণে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামা হয়নি। দ্বিতীয় ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমেই করলেন হ্যাটট্রিক। এরপর সেমিফাইনাল পর্যন্ত যে জাদু দেখালেন, তাতে সবাই ধরে নিয়েছিল ফাইনালে চিলিকে হারয়ে গতবারের প্রতিশোধ নেবে আর্জেন্টিনা। কিন্তু হায়! এভাবেই বার বার হতাশায় ডুবতে হয় আর্জেন্টিনা সমর্থকদের। সেই ১৯৯৩ সালের পর থেকে টানা ২৩ বছর। কোন শিরোপা নেই।
Read More News
২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনাল, ২০১৫ ও ২০১৬ কোপা আমেরিকার ফাইনালে এসেও মেসি ব্যর্থ। ফুটবলের জীবন্ত এই কিংবন্দন্তি পারলেন না শিরোপা খরা ঘোচাতে। পারলেন না নিজের নামের পাশে একটি আন্তর্জাতিক শিরোপা কৃতিত্ব স্থাপন করতে। আর কী কখনও সুযোগ পাবেন আর্জেন্টিনার সর্বকালের সর্বোচ্চ এই গোলদাতা?
মেসি নিউজার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয়বার আসতে চাইবেন কি না সন্দেহ। এখানেই যে ট্র্যাজেডির নায়ক হয়ে রইলেন তিনি। টাইব্রেকারের মত ভাগ্য নির্ধারনী পর্বে এসে এভাবে হতাশ করবেন তিনি, নিজের ক্যারিয়ারের সব অর্জন জলাঞ্জলি দেবেন, কে ভেবেছিল? স্বপ্নেও কী কখনও কল্পনা করতে পেরেছিলেন মেসি নিজেই? অথচ ১২০ মিনিট পর যখন খেলা গড়াল টাইব্রেকারে, সেখানেই ভিদালের শর্ট ঠেকিয়ে দিয়ে আর্জেন্টিনা গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো তখন নায়ক বনে গেছেন।
উল্লাসে ফেটে পড়লো পুরো স্টেডিয়ামা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সেই উল্লাস হতাশার রূপ নিল। আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শটটি নিতে এলেন মেসি। চিয়ার্স চিয়ার্স, ভামোস ভামোস মেসি- চিৎকারে পুরো মেটলাইফ যেন কাঁপছিল। কিন্তু স্টেডিয়ামের দর্শকরাসহ টিভির পর্দায় তাকিয়ে থাকা বিশ্বের কোটি কোটি ভক্তদের এভাবে হতাশ করবেন মেসি, তা কে জানাতো। যে মেসি আর্জেন্টিনার ঘরে শিরোপা তুলে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই মেসিই কিনা বলটা পাঠিয়ে দিলেন পোস্টের ওপর দিয়ে। অথচ তার মতো এমন স্পট কিক মাস্টারের কাছ থেকে এমন বাজে শট ভুলেও কল্পনা করেননি। মেসির বল উড়িয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যেন আর্জেন্টিনার শিরোপাকে উড়িয়ে দিলেন এই ফুটবল জাদুকর। শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টিনার চতুর্থ শটটা ঠেকিয়ে দিয়ে ম্যাচের নায়ক বনে গেলেন বার্সেলোনার চিলিয়ান গোলরক্ষক ব্রাভো। একই সঙ্গে মেসিদের কাঁদিয়ে আরও একটি কোপা আমেরিকার শিরোপা উপহার দিলেন তিনি চিলিকে।