কে আগে ব্যাট করবে? সেটা নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড ঘটে যেতে পারে পাড়ার ক্রিকেটে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তেমনটি হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। তার পরও বহুদিন ধরে ক্রিকেটে টস নামক ভাগ্য পরীক্ষাটি প্রচলিত রয়েছে। তবে আর বুঝি এই টস নামক ভাগ্য পরীক্ষা ক্রিকেটে থাকছে না। ইংল্যান্ডে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়ে গেছে টসহীন ক্রিকেট ম্যাচ।
Read More News
কাউন্টি ক্রিকেটে চারটি ম্যাচ শুরু হয়েছে বিনা টসে। এক বছর ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে পরীক্ষামূলকভাবে টসবিহীন ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে গতকাল টসবিহীন ক্রিকেটের প্রথম দিনেই বোঝা গেছে এই নিয়ম চালু হতে বেশি সময় লাগবে না।
নতুন এই নিয়মে সফরকারী দল কোনো টস ছাড়াই প্রথমে ফিল্ডিং নিতে পারবেন। কিন্তু তিনি যদি ব্যাট করতে চান সেক্ষেত্রে টসের প্রয়োজন হবে। গতকাল কাউন্টি ক্রিকেটের চারটি ম্যাচে সফরকারী দল প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। ফলে কোনো টসের প্রয়োজন হয়নি। তবে একটি ম্যাচে সফরকারী দলের অধিনায়ক আগে ব্যাট করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ফলে টস হয়। আর টস জিতে তিনি প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
অবশ্য গেল বছরের আগস্টে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার রিকি পন্টিং টেস্টে টস না করার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তার মতে টেস্ট ক্রিকেটের ক্ষেত্রে সফরকারী দলের অধিনায়ককে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত যে তার দল ব্যাট করবে নাকি বল করবে।
যেখানে স্বাগতিক দল অনেক সুবিধা পায়, সেখানে সফরকারী দলকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে কিছুটা হলেও সুবিধা পাবে তারা। তার এ প্রস্তাব সমর্থন করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্রেট ক্রিকেটার মাইকেল হোল্ডিং। তবে বিষয়টিকে ততটা সিরিয়াস মনে করেননি অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার স্টিভ ওয়াহ।
ওয়াহ বলেছিলেন, ‘টেস্টে টস না থাকলে আমি কিছু মনে করব না। তবে টসকে আমার কাছে খারাপ কোনো জিনিস মনে হয় না। দিনশেষে আমি মনে করি, ঘরের বাইরে টস ও কন্ডিশনের ওপর অনেক বেশি জোর দেয়ার সুযোগ রয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি এর বিকল্প কোনো উপায় খুঁজে বের করে তাহলেও আমি কিছু মনে করব না। আধুনিক ক্রিকেটারদের যেকোনো দেশে, যেকোনো কন্ডিশনে ভালো পারফর্ম করা উচিত।’
এদিকে রিকি পন্টিংয়ের প্রস্তাবকে সমর্থন করে মাইকেল হোল্ডিং উইজডেন ইন্ডিয়াকে বলেছিলেন, ‘রিকি পন্টিং যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করে দেখা উচিত। হয়তো টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জন্য টস একটি বড় জিনিস। এটা কিছুটা টেনশন তৈরি করে। যখন মুদ্রাটি বাতাসে ছোড়া হয় তখন সবার নজর মুদ্রার দিকে থাকে। টস জিতে অধিনায়ক কী নেন সেটার দিকেও নজর থাকে সবার। কিন্তু বিষয়টি এখন আর অতটা প্রাসঙ্গিক নয়। সময় বদলেছে। টেস্টের ক্রিকেটের স্বার্থ এখন ক্ষীয়মান। এখন আপনাকে যা করতে হবে তা হলো- ব্যাট ও বলের লড়াইটা নিশ্চিত করতে হবে।