যশোর সদর উপজেলায় নয়দিনে সাতজন খুন হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দু’জন বিএনপি নেতা একজন কলেজছাত্র। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সদর উপজেলার শ্যামনগর-সাতমাইল এলাকায় ইদ্রিস আলী (৪৫) নামে এক বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত ইদ্রিস আলী কাশেমপুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। তিন সন্ত্রাসী একটি মোটরসাইকেল যোগে শ্যামনগর এলাকায় গিয়ে ইদ্রিস আলীর মাথা ও বুকে গুলি করে। ২৩ মার্চ বুধবার আট ঘণ্টার ব্যবধানে দু’জন খুন হন। এরমধ্যে একজন হত্যা মামলার আসামি ও অপরজন বিএনপি নেতা। বুধবার দুপুর ২টার দিকে প্রকাশ্যে শহরতলীর রাজারহাট মাইক্রোওয়েভ সেন্টারের কাছে যশোরের যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন হত্যা মামলার আসামি রাসেলকে (২২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
Read More News
অপরদিকে রাত ১০ টার দিকে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস হোসেন (৫২) খুন হন। ঘটনাটি ঘটে শহরের লোহাপট্টি এলাকায়। তিনি শহরতলীর বিরামপুর বটতলা এলাকার আমিন উদ্দিনের ছেলে। ২৭ মার্চ রাতে যশোর শহরের রেলগেটে জিম তরফদার (১৮) নামে এক কলেজছাত্র খুন হন। তিনি রেলগেট চোরমারা দিঘির পাড়ের শেখ আজমের ছেলে। এদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে রেলগেটের বেবী নামে এক মহিলার বাড়ির সামনে জিম তরফদারের সাথে তার এক বন্ধু রাসেলের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রাসেল তাকে ছুরিকাঘাত করে।
বৃস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের চাঁচড়া ভাতুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বোমাবাজি ও গোলাগুলিতে আবদুস সাত্তার বিশে (৭০) নামের এক ফেরিওয়ালা নিহত হন। নির্বাচন চলাকালে কেন্দ্র দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে ছোড়া বোমা ও গুলিতে বিশের মৃত্যু হয়। স্থানীয়রা জানান, ভোট কেন্দ্র দখল নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ারুল করিম আনু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল আজিজ বিশ্বাস (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী) সমর্থদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে একপক্ষ ব্যাপক বোমাবাজি করতে করতে কেন্দ্রের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এসময় গোলাগুলি ও বোমা হামলার এক পর্যায়ে ফেরিওয়ালা (বাদাম বিক্রেতা) আবদুস সাত্তার গুলিবিদ্ধ হয়ে ও বোমা বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এদিকে নির্বাচনের আগের দিন যশোরে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে আহত দু’জন নিহত হয়েছেন। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে তারা নিহত হন। নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের কাঠামারা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ইবাদুল ইসলাম (৩৮) ও একই গ্রামের আনার উদ্দিনের ছেলে সবুজ (২৯)। তবে নিহতের স্বজনরা দাবি করেছেন ইবাদুল ইসলাম ও সবুজ সন্ত্রীদের বোমা হামলায় নিহত হয়েছেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান, হত্যাকাণ্ডগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা।