কোনও কারণ ছাড়াই একদিন খেয়াল করলেন আপনার সুন্দর কালো চুল থেকে ঝরছে খুশকি। নিয়মিত চুল পরিষ্কার করছেন, শ্যাম্পু করছেন, কন্ডিশনার দিচ্ছেন- এর পরেও কেন খুশকি হবে? কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে আসলে অনেক কাজই আমরা করি যার ফলে খুশকি দেখা দিতে পারে। আমাদের স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপরেও খুশকি থাকা না থাকা নির্ভরশীল। চলুন দেখে নেই খুশকি হবার অজানা এসব কারণ।
১) আপনার মাথার ত্বক সংবেদনশীল
অনেকেই ভাবি মাথার ত্বক শুকনো হলেই খুশকি হবে। আসলে কিন্তু এর জন্য দায়ী Pityrosporum orbiculare নামের এক ফাঙ্গাস যা আমাদের সবারই মাথায় থাকে কমবেশি। এই ফাঙ্গাস আমাদের মাথার ত্বক থেকে তেল খেয়ে বেঁচে থাকে। এ কারণে অনেক সময় দেখা যায় যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের খুশকির প্রকোপ বেশি। আপনার মাথার ত্বকও যদি এমন হয়, তার অর্থ হলো এই ফাঙ্গাসের কারণে যে কোনও সময়েই আপনার খুশকি হতে পারে। সাধারণত ঘরোয়া প্রতিকার বা অ্যান্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু সপ্তাহ দুয়েক ব্যবহার করলেই এই সমস্যা চলে যায়।
২) আপনি স্ট্রেসে আছেন
আপনার রিল্যাক্স করা প্রয়োজন- এই ব্যাপারটা বোঝা যেতে পারে ড্যানড্রাফের প্রাদুর্ভাব দেখে। ত্বকের যে কোনও সমস্যাকে বাড়িয়ে দিতে পারে স্ট্রেস। স্ট্রেস আমাদের ইমিউন সিস্টেমের বারোটা বাজিয়ে দেয়। এতে ড্যানড্রাফের সমস্যাও বাড়ে। দৈনন্দিন জীবনে শান্তি নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। ইয়োগা করুন, কিছুক্ষণ হেঁটে আসুন, গভীর নিঃশ্বাস নিন। স্ট্রেস কমাতে পারলে ড্যানড্রাফের সমস্যাও কমে আসবে।
৩) আপনি চুল ঠিকমতো পরিষ্কার করছেন না
প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের মাথার ত্বক তেল এবং সিবাম নামের একটি পদার্থ উৎপাদন করে। যখন এগুলো মাথার ত্বকে জমে যায়, তখন এগুলো খুশকির প্রকোপ বাড়ায়। নিয়মিত শ্যাম্পু না করলে বা চুল ঠিকমতো ধোয়া না হলে এগুলোর পরিমাণ বাড়তে পারে। আপনি এক্ষেত্রে টি ট্রি অয়েল সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও এই শ্যাম্পু ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে চুল থেকে। চুলে শ্যাম্পু থেকে গেলে সেটাও খুশকি বাড়াতে পারে।
৪) আপনি ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করছেন না
শুধু ভালো ভালো শ্যাম্পু, কন্ডিশনার আর ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করলেই হবে না। চুলের পুষ্টি যোগাতে হবে ভেতর থেকে। আপনার খাদ্যভ্যাসের ওপরে খুশকির পুরো দোষ চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয় বটে। কিন্তু কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলোর কারণে খুশকি অনেক বেড়ে যেতে পারে। যেমন স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট বেশি আছে এমন খাবারের কারণে সেবাশিয়াস গ্ল্যান্ডগুলো অনেক বেশি করে তেল উৎপাদন করে যার ফলে খুশকি বেড়ে যেতে পারে। বেশি করে খান স্বাস্থ্যকর মনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড। এর ভালো উৎস হলো অ্যাভোকাডো, বাদাম, জলপাই এবং স্যাফ্লাওয়ার অয়েল। ভিটামিন বি কম খেলেও খুশকি বাড়তে পারে।
৫) আপনি চুলের ওপর বেশি অত্যাচার করছেন
কিছু কিছু হেয়ার স্টাইলিং প্রোডাক্ট খুশকির প্রকোপ বাড়াতে পারে। খুব দরকার না হলে হেয়ার স্প্রে, জেল এবং মুজ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
ড্যানড্রাফ এমন একটি সমস্যা যা থেকে আপনি পুরোপুরি নিস্তার পাবেন না। যতদিন বেঁচে থাকবেন কোনো না কোনো সময়ে এটা দেখা দেবেই। তবে এসব কারণ জানা থাকলে খুশকি কমিয়ে রাখা ও নিয়ন্ত্রণ করা আপনার জন্য সহজ হবে।