আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাণী দিয়েছেন। মহিলা এবং শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ মানবাধিকার ও নারী সংগঠন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
‘অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান’ প্রতিপাদ্যে মহিলা এবং শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিকালে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও আলোচনা সভার আয়োজনসহ বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারের মাধ্যমে দিবসটি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আঁধার ভাঙার বিশেষ আয়োজন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
Read More News
প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এ উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে নারীর ক্ষমতায়ন, সমসুযোগ, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় উন্নয়নের মূল ধারায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নারী-পুরুষ সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট তার বাণীতে বলেন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনের সর্বস্তরে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, সরকার নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা ও দারিদ্র্যবিমোচনকে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনায় অগ্রভাগে স্থান দিয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে শেখ হাসিনা বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, যাদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠায় নারীর সমঅধিকার এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন আজ সর্বব্যাপী হয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নারী জাগরণের ওইসব অগ্রদূতদের তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
নারীসমাজ যাতে অবহেলা, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার এবং ন্যায্য অধিকার থেকে তারা যাতে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বাণীতে বলেন, আমাদের দেশের নারীদের কল্যাণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রশংসনীয় উদ্যোগের ফলেই নারীরা আজ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন নারী সংগঠন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। ‘নারীপক্ষ’ দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ঠিক করেছে ‘উৎসবে পার্বণে, নারী থাকবে সবখানে’। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দুর্নীতিবিরোধী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
‘ক্ষমতায়িত নারী, জাগ্রত বিবেক দুর্নীতি রুখবেই’ এ প্রতিপাদ্যে আজ (মঙ্গলবার) এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ঢাকার ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মুক্তমঞ্চে বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে এ অনুষ্ঠানটি। টিআইবির ইয়েস সদস্য, কর্মীবৃন্দ এবং সমমনা সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত। বাংলাদেশ প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন দিবসটি উপলক্ষে গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের সভাপতি রাজিয়া বেগম।
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্কের সেলাই কারখানায় বিপজ্জনক ও অমানবিক কর্মপরিবেশ, স্বল্প মজুরি এবং দৈনিক ১২ ঘণ্টা শ্রমের বিরুদ্ধে নারী শ্রমিকরা প্রতিবাদ করে। এরপর বিভিন্ন সময়ে ৮ মার্চে উল্লেখযোগ্য আরো ঘটনার ধারাবাহিকতায় ১৯১০ সালে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা ক্লারা জেটকিনের প্রস্তাবে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সাল থেকে এই দিনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন শুরু করে। তখন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি উদযাপন করা হয়।