রাজ্যে আফ্রিকান মাছি। মাংসাষী বিপজ্জনক এই মাছির খোঁজ মিলল ডুয়ার্সের জঙ্গলে। সম্প্রতি মৃত একটি হাতির দেহ ময়নাতদন্তের পরে চোখ কপালে উঠেছে বন দফতরের।মরা হাতির পেটে আফ্রিকার জঙ্গলের ‘বটফ্লাই’। এই বিপজ্জনক মাছির হাজার হাজার লার্ভা দেখে চমকে উঠলেন প্রাণী চিকিৎসক দীপক বার। রবিবার সকালে জলপাইগুড়ির নাগরাকাটার ডায়নার টন্ডুর জঙ্গলে একটি দাঁতাল হাতির দেহ ময়নাতদন্ত করে বটফ্লাইয়ের হদিল মিলল। পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথম আফ্রিকার গহন জঙ্গলে থাকা মাংসাষী বটফ্লাইয়ের উপস্থিতি সামনে এল। ওই মাছির হানাতেই বুনো হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।রবিরার মৃত হাতিকে ডুয়ার্সের পানঝোড়ার জঙ্গলে নিয়ে আসা হয় ময়নাতদন্তের জন্য। সোমবার দুপুর থেকেই ময়নাতদন্ত শুরু হয়। হাতির দেহ ব্যবচ্ছেদ করতেই চমকে ওঠেন তিনি। দেখা যায় মৃত হাতিটির খাদ্যনালী থেকে সারা শরীরে কয়েক হাজার বটফ্লাইয়ের লার্ভা দেখতে পান। হাতির মুখ দিয়ে খাদ্যনালীতে ঢুকে পড়া এই বিদেশি প্রজাতির মাছির লার্ভা সারা শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। আর তার জেরেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যায় হাতিটি।চিকিৎসক দীপক বার জানিয়েছেন, হাতিটি দীর্ঘ ১২-১৫ দিন কোনও খাবার খায়নি। খেতে না পেরে আরও অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বুনো হাতিটি। এই লার্ভা পরীক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ব বিদ্যালয়ের গবেষনাগার এবং জলপাইগুড়ির প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের আঞ্চলিক পরীক্ষাগারে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।জলপাইগুড়ির বনাধিকারিক বিদ্যুৎ সরকার জানিয়েছেন, এই প্রজাতির ভয়ঙ্কর মাংসাষী বটফ্লাই মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা, কঙ্গো, মোজাম্বিক, ঘানা এবং এশিয়ার মধ্যে শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারে দেখা যায়। এর আগে জলপাইগুড়ির ধুপঝোড়ার কুনকি হাতি রাজার দাঁতে এই প্রজাতির মাছির উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রথম অবস্থায় ধরা পড়ায় চিকিৎসায় সেরে উঠেছিল রাজা।এখন চিন্তা বাড়ছে। আরও কত প্রাণী এই মারাত্মক বিষধর মাছির কবলে পড়েছে।